অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: রহস্যজনকভাবে বাড়িতে খুন হলেন এক হাতুড়ে চিকিৎসক ও তাঁর স্ত্রী। জানা গিয়েছে, চিকিৎসা করানোর নাম করে একজন ঢুকেছিলেন চিকিৎসকের বাড়িতে। তিনি বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই গলার নলি কাটা অবস্থায় বাড়ির মেঝেতে স্বামী-স্ত্রীর রক্তাক্ত দেহ সকলের নজরে পড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার সন্ধেয় ডেবরা থানার রাধামোহনপুর (১১/১) গ্রাম পঞ্চায়েতের ভগবানবাসান এলাকায়।
খবর পেয়ে ডেবরা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। বাড়ি থেকে দুটি মৃতদেহ উদ্ধার করে। মৃতের বাড়ির বাইরে থেকে একটি বাইক ও দুই জোড়া জুতো উদ্ধার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে মৃতদের নাম শেখ আলাউদ্দিন (৫৫) ও রূপসারা ওরফে হীরা বিবি (৪৭)। ঘটনার সময় বাড়িতে এই দুজন ছাড়া আর কেউ ছিল না।
[আরও পড়ুন: শুভেন্দুদের ‘খলিস্তানি’ কটাক্ষের প্রতিবাদ দেশজুড়ে, বিজেপির ‘ঘৃণা’র বিরুদ্ধে সরব রাহুল]
জানা গিয়েছে, মৃত দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছেন। ছেলে কর্মসূত্রে কেরলে থাকেন। আর মেয়ে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। পড়াশোনার সুবিধার্থে মেদিনীপুর শহরে থাকেন। এই ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আততায়ীদের চিহ্নিত করা গিয়েছে। শীঘ্রই ধরা পড়বে। সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” এদিকে এই দুজনকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন পরিবারের সদস্যরা। মৃতের ভাইপো শেখ আজহারউদ্দিন বলেন, “আমার কাকা ও কাকিমাকে খুন করা হয়েছে।”
জানা গিয়েছে, সন্ধেয় বাইকে চেপে দুজন ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের একেবারে ধারে এই চিকিৎসকদের বাড়ির সামনে পৌঁছয়। তার পর চিকিৎসা করানোর অজুহাতে একজন চিকিৎসকের বাড়ির ভেতরে ঢোকে। অপরজন বাইরে অপেক্ষা করছিল। সেই সময় বাড়ির ভিতর থেকে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশী এক মহিলা মুম্বই নিবাসী তাঁর স্বামীকে ফোন করেন। সেই ব্যক্তি মৃতের ভাগ্নে শামিম আখতারকে ফোন করেন। সেই ফোন পেয়ে আখতার সাহেব মামার বাড়ির সামনে পৌঁছন। তখন তিনি দেখেন একজন বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। এই ব্যাপারে শামিম আখতার বলেন, “অপরিচিত সেই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করায় বলেন, চিকিৎসক নেই। তাই বাইরে অপেক্ষা করছেন। তার কিছুক্ষণ পরেই ভিতর থেকে অপর একজন বেরিয়ে এসে বলেন চিকিৎসককে দেখানো হয়ে গিয়েছে। তার পরেই দুজনে বেরিয়ে যেতে চায়। তখন সন্দেহ হওয়ায় আরও কয়েকজনকে ডেকে আনি। সকলে মিলে দুজনকে আটকাতে গেলে ওরা বাইক ও জুতো ফেলে পেছনের জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে চম্পট দেয়। তারপর ঘরের ভিতরে ঢুকে দেখি মামা ও মামি গলা কাটা অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছেন।” এদিকে ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ দুজন আততায়ীকে চিহ্নিত করতে পেরেছে বলে জানা গিয়েছে। তার সঙ্গে পুলিশ জানতে পেরেছে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিবাদ এই খুনের পিছনে রয়েছে।