সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চোখের জলে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে চিরবিদায় জানাল স্কটল্যান্ড। মঙ্গলবার এডিনবরা থেকে রয়্যাল এয়ারফোর্সের বিশেষ বিমানে লন্ডনে নিয়ে আসা হয় তাঁর কফিনবন্দি নিথর দেহ। শেষ দর্শনের জন্য বাকিংহাম প্যালেসে শায়িত থাকবেন রানি।
গত বৃহস্পতিবার স্কটল্যান্ডের বালমারোল প্রাসাদে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ (Elizabeth II)। সোমবার এডিনবরায় সেন্ট জাইলস ক্যাথিড্রালে শেষবারের জন্য রানিকে বিদায় জানান হাজার হাজার মানুষ। স্কটিশ রাজধানীর পথে রানির কফিনের সঙ্গে পা মিলিয়েছিলেন তাঁর চার সন্তান-রাজা তৃতীয় চার্লস, প্রিন্সেস অ্যান, প্রিন্স অ্যান্ড্রু ও প্রিন্স এডওয়ার্ড। হলিরুড প্যালেস থেকে ক্যাথিড্রালে নিয়ে আসা হয় রানির দেহ। প্রিয় রানির কফিন একবার চোখের দেখা দেখতে এডিনবরার রাস্তার দু’পাশে নেমেছিল মানুষের ঢল। স্কটল্যান্ডে অনুষ্ঠান শেষে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ৮টা নাগাদ লন্ডন পৌঁছয় কফিন। রাজধানীতে রাজা তৃতীয় চার্লস ও ‘কুইন কনসর্ট’ ক্যামিলা গ্রহণ করেন সেই কফিন।
[আরও পড়ুন: হুবহু মিলিয়েছিলেন রানির মৃত্যুর দিন, ব্রিটেনের নতুন রাজার আয়ু কতদিন, জানালেন সেই ভবিষ্যৎদ্রষ্টা]
বাকিংহাম প্যালেস জানিয়েছে, আজ বুধবার ওয়েস্টমিনস্টার হলে আনা হবে রানির মরদেহ। সেখানেই তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন নগরবাসীরা। কফিনের প্রতিটি কোণায় সর্বক্ষণ পাহারায় থাকবেন রাজপরিবারের দায়িত্বে নিযুক্ত সেনারা। বুধবার সন্ধ্যা পাঁচটা থেকে আগামী সোমবার শেষকৃত্যের আগে সন্ধে সাড়ে ছ’টা পর্যন্ত আমজনতা রানিকে অন্তিমশ্রদ্ধা জানাতে পারবেন। তারপর ওইদিনই ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে স্বামী ফিলিপের পাশেই সমাহিত করা হবে তাঁকে।
এদিকে, রানির মৃত্যুতে স্কটল্যান্ডে (Scotland) জোরাল হচ্ছে স্বাধীনতার দাবি। ‘ইউনাইটেড কিংডম’ তথা গ্রেট ব্রিটেন থেকে আলাদা হয়ে সার্বভৌম প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চাইছে স্কটল্যান্ডের জনগণের একাংশ। গত শনিবার এডিনবরায় রানির শেষযাত্রার সময় রাজতন্ত্রের প্রতিবাদ করায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই দাবি উঠছে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডেও। গতকাল প্রদেশটির রাজধানী বেলফাস্ট যান রাজা তৃতীয় চার্লস ও তাঁর স্ত্রী ক্যামিলা। সেখানে রাজনৈতিক নেতা ও খ্রিস্টান, মুসলিম, চিনা ও হিন্দু ধর্মগুরুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, চার্লসকে রাজা ঘোষণা করার ওই অনুষ্ঠান এড়িয়ে যায় প্রাক্তন ‘আইরিশ রিপাবলিকান আর্মি’র রাজনৈতিক শাখা সিন ফেইন। সবমিলিয়ে রানির মৃত্যুতে ‘ইউনাইটেড কিংডম’ বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে।