সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের (Bangladesh) কক্সবাজারের জঙ্গলে সীমান্তে এলাকায় বড়সড় অস্ত্র কারখানার হদিশ পেলেন সে দেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (RAB)। মায়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে উদ্ধার হয় প্রচুর অস্ত্র। পুলিশকে দেখে প্রথমে পালটা হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩ রোহিঙ্গাকে (Rohingya)। সূত্রের খবর, এই তিনজনই অস্ত্রশস্ত্র তৈরি করে ডাকাতদলকে সরবরাহ করত বলে জেরায় স্বীকার করেছে। সীমান্ত এলাকায় এত বড় অস্ত্র কারখানার হদিশ স্বভাবতই উদ্বেগ অনেকটা বাড়িয়েছে পুলিশ প্রশাসনের। নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে RAB.
কক্সবাজারের (Cox’s Bazar) উখিয়া উপজেলায় এমনিতে রোহিঙ্গাদের বসবাস রয়েছে। প্রায়শয়ই নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ লেগে থাকে। কিন্তু মায়ানমার সীমান্ত এলাকার জঙ্গলের মধ্যে যে এভাবে অস্ত্র কারখানার রমরমা হয়ে উঠেছে, তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি কেউ। এবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে RAB আধিকারিকরা তল্লাশি চালাতেই চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। মায়ানমার সীমান্ত ঘেঁষা জঙ্গলে বিশাল বড় অস্ত্র কারখানা। প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র (Arms) তৈরি হচ্ছে সেখানে। কারখানায় অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেন RAB তদন্তকারীরা।
[আরও পডুন: বাংলাদেশে নৃশংস হত্যাকাণ্ড, স্কুলে ঢুকে দশম শ্রেণির পড়ুয়াকে কুপিয়ে খুন]
RAB সূত্রে খবর, তিনজন রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম – বাইতুল্লা, হাবিবুল্লা, মহম্মদ হাসান। এদের মধ্যে সবচেয়ে কমবয়সি বাইতুল্লা। মাত্র ১৯ বছর। তার দাদা হাবিবুল্লার নেতৃত্বে অস্ত্র তৈরি হত। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ধৃতরা জেরায় স্বীকার করেছে, ডাকাতদলকে সরবরাহের জন্যই তারা অস্ত্র বানাত। মায়ানমার, বাংলাদেশ – দু’দেশের ডাকাতরাই এখান থেকে অস্ত্র কিনত। RAB’এর ডেপুটি কমান্ডিং অফিসার মেজর মেহেদি হাসান জানিয়েছেন, ”আমরা খবর পেয়েছিলাম, পাহাড় লাগোয়া জঙ্গলে প্রচুর অস্ত্র তৈরি হচ্ছে কয়েকদিন ধরে। তার ভিত্তিতে আজ সকালে অভিযান চালাই। ৩ জনকে গ্রেপ্তার করার পর জানতে পারি, তারা সমাজবিরোধীদের অস্ত্র সরবরাহ করত।” তিনি আরও জানান, ”আমাদের অভিযানকারী দল যখন সেখানে পৌঁছয়, তখন ওরা আমাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। আমাদের সদস্যরাও আত্মরক্ষায় পালটা গুলিবর্ষণ করে। তারপর কারখানার ভিতরে ঢুকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।
[আরও পডুন: একেই বলে ‘চিনা মাল’! চিন থেকে যুদ্ধজাহাজ কিনে বেকায়দায় বাংলাদেশ]
বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার পর থেকেই নানা সমস্যায় জর্জরিত। কখনও ছিনতাই, খুনের মতো অপরাধমূলক কার্যকলাপ, কখনও আবার জঙ্গিপনা – এসব ঘটনা ঘটতেই থাকছে উখিয়া-সহ রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে। এবার এত বড় অস্ত্র কারখানার হদিশ মেলায় নিরাপত্তা আরও অনিশ্চয়তার মুখে।