সুমন করাতি, হুগলি: আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তরণী চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় (Rachna Banerjee)। তাতেই ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ, কটাক্ষের পালা শুরু হয়ে যায়। কড়া ভাষার এই সমস্ত ট্রোলের জবাব দিলেন বাংলা টেলিভিশনের 'দিদি নম্বর ১'।
আর জি কর কাণ্ডের বীভৎসতায় শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়েই রচনা বলেছিলেন, "স্বাধীনতা দিবসে দেশ স্বাধীন হয়েছে। আমরা কতটা স্বাধীন হয়েছি? আমরা কী স্বাধীনভাবে ঘুরতে পারছি? দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, মণিপুর – একটার পর একটা ঘটনা। আমরা কবে স্বাধীনভাবে ঘুরতে পারব, সেটাই প্রশ্ন। আমরা কেন করতে পারছি না? আর জি করের ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। মুখে আনা যায় না।"
[আরও পড়ুন: সায়নীর ছবি ব্যবহার করে RG Kar কাণ্ডের অপপ্রচার! তীব্র প্রতিবাদ গায়িকার]
কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন রচনা। চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন, "দিনের শেষে কাজ করে গাড়ি করে ফিরি, সব মানুষ তা পান না। অনেক মহিলা হেঁটে, বাসে ঝুলতে ঝুলতে বাড়ি ফেরেন। কেউ ট্যাক্সি, অটো করে ফেরেন। তাঁরা যখন ফেরেন হয়তো এখন মনে হচ্ছে বাড়িতে ঠিকমতো পৌঁছতে পারব তো? কেন হবে বলুন তো? মাথা উঁচু করে বাঁচব আমরা। পুরুষ মানুষ আমাকে দেখলে সম্মান করবে, বাঁচানোর চেষ্টা করবে, বিপদে পড়লে হাত ধরে বাড়ি পৌঁছে দেবে। পুরুষ মানুষের জাত কি এমন হবে আমাকে ছিঁড়ে খাবে?"
অভিনেত্রী তথা সাংসদের এই ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। নানাভাবে তাঁকে ট্রোল করা হয়। চুঁচুড়ায় তৃণমূলের প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দিতে গিয়ে এই ট্রোলের জবাব দেন রচনা। তারকা সাংসদ বলেন, "তৃণমূলের সঙ্গে যাত্রা শুরু হওয়ার পর থেকে ট্রোল হচ্ছি। এতে আমার কিছু যায় আসে না। কিন্তু আমি যেটা বলেছি, যে ভিডিওটা পোস্ট করেছিলাম সেটা মন থেকে ফিল করেছিলাম বলে পোস্ট করেছিলাম। আমি একজন শিল্পী মানুষ। মানুষজন অনেক রকম ভাবে ট্রোল করে, চোখের জল কে ভাবে গ্লিসারিন। অনেকে ঋতুপর্ণা শঙ্খ বাজানোটাকেও (আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে শঙ্খ বাজিয়ে কটাক্ষের শিকার হয়েছিলেন নায়িকা) ট্রোল করছে। এই পরিস্থিতিতে, আজকে যখন অত্যন্ত নিন্দনীয় একটি ঘটনা ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের বুকে। সেটা নিয়ে মানুষ এইরকমভাবে ট্রোল করছে অপর মানুষকে। কোথায় তারা তাঁর (নিহত চিকিৎসকের) বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকবে, যে আজকে ভিক্টিম, যার সঙ্গে এরকম একটা ঘটনা ঘটেছে, তার সম্পর্কে কিছু বলবে, তার পাশে যাবে, তা না করে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় কখন চোখের জল ফেলল, রচনার চোখে কাজল আছে কিনা, এত সময় মানুষের আছে ওই সমস্ত নিয়ে কথা বলার। আমি এগুলোকে গুরুত্ব দিই না, এগুলো পাত্তা দিই না, এগুলো নিয়ে কথা বলার আমার তো সময় নেই।"