সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশের বেকারত্ব বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের খারাপ পরিস্থিতি নিয়ে ফের মুখ খুললেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের (RBI) প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন (Raghuram Rajan)। তাঁর বক্তব্য, যদি ভারতে বেকারত্বের হার বেশি থাকে তবে সুযোগ নেবে ‘উদ্যমী’ রাজনীতিবিদরা, তাঁরা কর্মসংস্থানের মতো প্রকৃত সমস্যা থেকে মুখ ঘুরিয়ে ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি করবে।
‘প্রো মার্কেট’ (ProMarket) নামে একটি সংবাদসংস্থার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, বেকারত্বই দেশের সবচেয়ে বড় বিপদ। তাঁর কথায়, ”বেকারত্বের হার বেশি থাকলে, নিম্ন মধ্যবিত্তের জন্য আরও বৈষম্য এবং বিভাজন তৈরি হয়। এই সুযোগ কাজে লাগায় ‘উদ্যমী’ রাজনীতিবিদরা। তাঁরা বিভাজনের রাজনীতি করে। তাঁরা হয়তো সেই কারণেই বলে ‘আসুন আমরা এই সাবেক হিন্দু মন্দিরগুলি পুনরুদ্ধারের দিকে মনোনিবেশ করি যেখানে এখন মসজিদ রয়েছে’। এটা তাঁরা করেন কর্মসংস্থান বৃদ্ধির দিকটি এড়িয়ে যাওয়ার জন্যই।”
[আরও পড়ুন: ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলা: কংগ্রেস কর্মীদের বিক্ষোভের মাঝেই ইডি দপ্তরে হাজির রাহুল গান্ধী]
রাজনের মতে, ভারতের একটি শক্তিশালী, টেকসই এবং ন্যায়সঙ্গত বৃদ্ধির (অর্থনৈতিক) পরিকল্পনা দরকার। এমন ভাবনা যা নারী ও মুসলিম-সহ সমস্ত সংখ্যালঘুদের একত্রিত করে তাদের আর্থিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। তবে রাজনের মতে মহামারীর ঝঞ্ঝা পেরিয়ে ভারত খুব খারাপ পরিস্থিতিতেও নেই।
তিনি বলেন, “শুধুমাত্র দেশের আর্থিক বৃদ্ধির দিকে নজর দিলে দেখা যাবে মহামারীর চাপ সামলে দেশের অর্থনীতি বিপজ্জনক অবস্থায় পৌঁছয়নি। কিন্তু দেশের কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে, এমনকী পরিস্থিতি সৌদি আরবের চেয়েও খারাপ।” রাজন বলেন, “আমি যখন এই ধরনের কথা বলি, তখন অনেকেই বিশ্বাস করেন না। কিন্তু সমস্যার সমাধান দরকার।”
[আরও পড়ুন: মেলেনি ফোন, মায়ের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে না পেরে হস্টেলেই আত্মঘাতী স্কুলপড়ুয়া]
প্রসঙ্গত, ক’দিন আগে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) মন্তব্য করেছিলেন, অদূর ভবিষ্যতে ভারতের হাল তীব্র অর্থসংকটে পড়া শ্রীলঙ্কার মতোই হতে চলেছে। সেই পরিস্থিতি এখনও তৈরি না হলেও ভারতীয় অর্থনীতির রক্তক্ষরণ অব্যাহত। একদিকে লাফিয়ে বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতি, অন্যদিকে ভারতীয় টাকা সর্বকালীন পতনের মুখোমুখি। বর্তমানে ডলার পিছু টাকার দাম ৭৭ টাকা ৮১ পয়সা। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বেকারত্বের হার। এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে মন্দির-মসজিদ রাজনীতি করছেন নেতারা, রাজনের এই মন্তব্যে বিতর্ক যে বাড়বে, তা বলাই বাহুল্য।