সুব্রত বিশ্বাস: এবার করোনার মারে পরিষেবা লাটে উঠল হাওড়ায় রেলের অর্থোপেডিক হাসপাতালে। অভিযোগ, পর্যাপ্ত পরিকাঠামো তৈরি না করেই হাড়ের হাসপাতালটিকে কোভিড-১৯ চিকিৎসা কেন্দ্রে পরিণত করা হয়েছে। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে, ভেঙে পড়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থা।
[আরও পড়ুন: করোনা সন্দেহে গ্রামে ঢুকতে বাধা, চিকিৎসায় দেরি হওয়ায় প্রাণ গেল জন্ডিস আক্রান্ত যুবকের]
এই অভিযোগের সুরাহা চেয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পূর্ব রেলের জিএমকে সোমবার চিঠি দিয়ে আবেদন জানায় রেলের মেনস ইউনিয়ন। দু’এক দিনের মধ্যে জিএম তাঁদের সঙ্গে বসে ব্যবস্থার আশ্বাসও দিয়েছেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ অভিযোগ করেন, “ভারতের মধ্যে রেলের সবচেয়ে বড় অর্থোপেডিক হাসপাতাল এটি। এখানে প্রচুর রোগীর চিকিৎসা হয়। তা সত্ত্বেও পর্যাপ্ত পরিকাঠামো ছাড়াই হাসপাতালটিকে কোভিড-১৯ চিকিৎসা কেন্দ্রে পরিণত করা হয়েছে।। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইড লাইন না মেনেই করোনা হাসপাতাল করা হয়েছে এখানে। সবচেয়ে জরুরি ভেন্টিলেশন মেশিনই নেই এই হাসপাতালে। এছাড়া শুধুমাত্র হাড়ের ডাক্তার দিয়ে করোনার চিকিৎসা কি সম্ভব।” তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “ওই হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর কোনও লাইফসাপোর্ট দেওয়া হয়নি। রোগীকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে পরে বেসরকারি হাসপাতালে পাঠালে আক্রান্ত ব্যক্তি ২৭ মে মারা যান।”
হাসপাতালটিকে পরিকাঠামো ছাড়াই করোনার চিকিৎসায় ব্যবহার করায় উপযুক্ত চিকিৎসা যেমন হচ্ছে না, তেমনই হাড়ের চিকিৎসা না হওয়ায় রেলকর্মীদের একটি বড় অংশ চরম বিপাকে পড়েছে। হাড়ের চিকিৎসার জন্য বিআর সিং হাসপাতালে যাচ্ছেন রেলকর্মীরা। সেখান থেকে এক বেসরকাররি হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে রোগীদের। ওই হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি থাকলেও রেল টাকা না দেওয়ায় সেখানে কর্তৃপক্ষ ভরতি এড়িয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়ে আমিতবাবু বলেন, “ওই হাসপাতাল দু’মাসে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা বিল হয়েছে। সেই টাকার অধিকাংশই মেটায়নি রেল। ফলে সেখানে কর্মীরা পরিষেবা পাচ্ছেন না।”
এদিকে, সেই বেসরকারি হাসপাতালে গেলেও জরুরি চিকিৎসা না করে করোনা টেস্ট করা হচ্ছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর গিয়ে শুরু হচ্ছে চিকিৎসা। ফলে রিপোর্টের অপেক্ষায় থমকে পড়ছে জরুরি চিকিৎসা। বিপদের মধ্যে পড়তে হচ্ছে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের। কর্মী সংগঠনের ক্ষোভ, হাড়ের চিকিৎসার হাসপাতালে যেমন করোনার উপযুক্ত চিকিৎসা হচ্ছে না তেমনই হাড়ের চিকিৎসা পরিষেবাও ব্যাহত হচ্ছে। এই অব্যবস্থা অবিলম্বে না মেটাল বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে যাবে কর্মী সংগঠন বলে তারা হুমকি দিয়েছে। আমিতবাবুর কথায়, পূর্ব রেলে চারটি ডিভিশন, তিনটি বড়ো ওয়ার্কশপ ফলে হাড় ভাঙার ঘটনা থেকে হাড়ের নানা সমস্যার রোজই দেখাদেয় বহু কর্মীর। সেখানে এই ধরনের সমস্যা মানা যাবে না।
[আরও পড়ুন: রেশনের ডাল নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য মনোমালিন্যে ইতি, রাজ্যের দাবি মেনে মুগডালই পাঠাচ্ছে দিল্লি]
The post হাওড়ায় রেলের অর্থোপেডিক হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা, আন্দোলনের হুমকি কর্মীদের appeared first on Sangbad Pratidin.