সুব্রত বিশ্বাস: রেলের ইউনিয়ন কার দখলে? আগামী দুদিন দেশজুড়ে সেই পরীক্ষা। এবার পূর্ব রেলে নির্বাচনে সরাসরি লড়ছে তৃণমূল। প্রতীক ইঞ্জিন। বুধবার পূর্ব রেলের প্রায় ৯৫ হাজার কর্মী ভোট দেবেন।
বুধ ও বৃহস্পতিবার সাধারণ কর্মীরা ভোট দেবেন। ৬ ডিসেম্বর ভোট দেবেন ট্রেনের চালক ও গার্ডরা (রানিং স্টাফরা)। পূর্ব রেলের মোট ১২৮টি বুথে এই প্রক্রিয়া চলবে। পূর্ব রেলে মোট পাঁচটি সংগঠন লড়াই করছে। বামপন্থী সংগঠন মেনস ইউনিয়ন, ডানপন্থী মেনস কংগ্রেস, তৃণমূল মেনস কংগ্রেস, বিজেপির কর্মচারী সংগঠন ও এমপ্লইজ ইউনিয়ন। মেনস ইউনিয়ন ও মেনস কংগ্রেসের মূল ইস্যু, পুরনো পেনশন ব্যবস্থা ফেরানো, রেল বেসরকারিকরণের বিরোধিতা ও রেলের জমি বিক্রির প্রতিবাদ। তৃণমূল দুই সংগঠনের দাবিদাওয়াকে মান্যতা দিলেও উভয় সংগঠনের কাজের সমালোচনা করেছে।
হাওড়া ও লিলুয়ার ভোটের তৃণমূলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কৈলাস মিশ্র বলেন, "রেলের কর্মী সংগঠনের দায়িত্বে থেকেও কর্মীদের কল্যাণে কাজ করতে ব্যর্থ হওয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজে অনুপ্রাণিত হয়েছেন রেলকর্মীরা। ভোটের আগেই মেনস কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ছত্রছায়াতে এসেছেন প্রায় ৫০ শতাংশ কর্মী।" ২০১৩ সালের পর এই বার ভোট হচ্ছে। সেবার সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছিল মেনস ইউনিয়ন। পূর্ব রেলের মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ বলেন, "আমরা চাই ভোট শান্তিপূর্ণ হোক। কর্মীদের রায়ই আমাদের পাথেয়।" মেনস কংগ্রেসের বিনোদ শর্মার দাবি, "আমরা আগেও ছিলাম, থাকব। তাই কর্মীদের চাহিদা মেটানোর দাবি নিয়েই লড়ব।"
মোট ভোটের ন্যূনতম ৩৫ শতাংশ পেলেই সংগঠন মান্যতা পাবে। মান্যতা প্রাপ্ত সংগঠনগুলি পারমানেন্ট নেগোসিয়েটিভ মেশিনারি (পিএনএম) করতে পারবে। পারমানেন্ট রেলওয়ে এমপ্লইজ ইন ম্যানেজমেন্ট (প্রেম) সুযোগ পাবে। অর্থাৎ রেল আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে দাবি পেশ করতে পারবে। রেলের অফিসে নিজেদের সংগঠন চালানোর জন্য দপ্তরে ঘর পাবে। বুধবার ভোট যাতে শান্তিপূর্ণভাবে হতে পারে, সেজন্য আরপিএফ-সহ জেলা পুলিশ বুথ ও দপ্তরগুলিতে মোতায়েন থাকবে। এগারো বছর পর ফের ভোট হওয়ায় এবার খুশির হাওয়া কর্মীদের মধ্যে। লিলুয়ার রেলকর্মী জহর বিশ্বাসের আক্ষেপ, "কর্মী সংগঠনগুলি কর্মীদের কল্যাণের নিয়ে চিন্তা করে না বলেই আজ এই দুর্দশার শিকার কর্মীরা। তৃণমূল কর্মী সংগঠন এলে কর্মীদের সহযোগিতার বহু কাজ হবে বলে মনে করেছেন।"