সুব্রত বিশ্বাস: দূরপাল্লার ট্রেনে হকারদের দৌরাত্ম্য রুখতে এবার কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে রেল (Indian Railways)। গত সোমবার দক্ষিণ ভারত থেকে ভায়া হাওড়া হয়ে গুয়াহাটিগামী একটি স্পেশ্যাল ট্রেনের ক্যাটারিং ম্যানেজারকে হকাররা মারধর করায় ক্ষুব্ধ আইআরসিটিসি কর্তৃপক্ষ।
[আরও পড়ুন: মাদ্রাসায় ৩ হাজার ৮০০ শিক্ষক নিয়োগের ভাবনা, নবান্নের সবুজ সংকেত পেলেই শুরু হবে প্রক্রিয়া]
করোনা আবহে লকডাউনের পর কাজ হারিয়ে বহু মানুষ ট্রেনে ফেরিওয়ালার কাজ শুরু করেছেন। প্রতিটি ট্রেনে হকার বাড়ায় উদ্বিগ্ন ক্যাটারিং সংস্থাগুলি। হাওড়া, শিয়ালদহ থেকে দূরপাল্লার ট্রেনে নানা সামগ্রী নিয়ে হকাররা ওঠেন। ঘটনার দিন হকাররা ট্রেনে চড়ে ক্যাটারিং সংস্থাকে চা বিক্রিতে বাধা দেয়। বাদানুবাদের পর ডানকুনিতে যাওয়ার পর ক্যাটারিং ম্যানেজারকে মারধর করলে হাওড়া আরপিএফ কন্ট্রোলে খবর আসে। সেখান থেকে মেসেজে সতর্ক করা হয় বর্ধমান আরপিএফ পোস্টকে। যদিও এই ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। আইআরসিটিসি সূত্রে বলা হয়েছে, এই কর্পোরেট সংস্থা থেকে ঠিকাদার সংস্থা ক্যাটারিংয়ের ঠিকা নেয়। ঠিকা সংস্থা নিজেদের কর্মী রাখে। ঠিকাভিত্তিক কর্মীরাও নিজেদের সামগ্রী বিক্রিতে জোর দেয়। ক্যাটারিং সংস্থার কর্মীদের চা, ঠাণ্ডা পানীয় একই সামগ্রী হওয়ায় সবসময়ই বেচতে বাধা দেয় হকাররা বলে অভিযোগ। কারণ এতে তাদের আয়ে ব্যাঘাত ঘটছে বলে দাবি ফেরিওয়ালাদের। এই টানাপোড়েনে এখন জেরবার ট্রেনের ক্যাটারিং কর্মীরা। হাওড়া—বর্ধমান, বর্ধমান থেকে বোলপুর, বোলপুর থেকে রামপুরহাটও সেখান থেকে মালদহ, মালদহ থেকে শিলিগুড়ি এই ভাবে ভাগ করা থাকে হকারদের তৈরি জোন। আসানসোল শাখা, খড়গপুর শাখা, শিয়ালদহ—ব্যাণ্ডেল, ডানকুনি প্রভৃতি জোনে ভাগ করা থাকে হকারদের এলাকা।
আইআরসিটিসি অনুমোদিত ভেন্ডারদের কথায়, প্রতিটি ট্রেনে হকার দৌরাত্ম্য রয়েছে, বিশেষত সকাল ও বিকেলের ট্রেনগুলিতে চা, ঠাণ্ডা পানীয় ও জল বিক্রির হকারদের দৌরাত্ম্য সীমাহীন। ক্যাটারিং সংস্থার কর্মীরাও ট্রেনে হকারদের মতো একই সামগ্রী বিক্রি করে। যার ফলে পারস্পারিক দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে প্রায় সময়েই। আইআরসিটিসির মতে, বিষয়টিতে লাগাম টানতে পারে আরপিএফ। মাঝে মধ্যেই তল্লাশি চালান তারা। তবে আইনি শিথিলতায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সম্প্রতি বার্ষিক ইন্সপেকশনে হকার দৌরাত্ম্য নিয়ে চরম উষ্মা প্রকাশ করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য হাওড়ার আরপিএফকে নির্দেশ দেন পূর্ব রেলের আরপিএফ আইজি। আরপিএফ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সারপ্রাইজ চেক হবে নিয়মিতভাবে। পরিস্থিতি সমলাতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।