জয়পুর: এ যেন কালী বন্দ্যোপাধ্যায় অভিনীত 'বাদশা' বা অক্ষয় কুমারের 'জানোয়ার' ছবির বাস্তবের রূপ! অপহরণকারীর থেকে নিজের মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতেই অঝোরে কান্না শিশুর। 'অচেনা' মায়ের কাছে যাবে না সে। তার কাছে কারণটা খুব স্বাভাবিক। ১১ মাস বয়স থেকে অপহরণকারীই তাকে কোলে-পিঠে মানুষ করছিল। আদরে, সোহাগে ভরিয়ে দিত তাকে। ক্রন্দনরত নিষ্পাপ শিশুর ভালোবাসা দেখে চোখ বেয়ে জল নেমে আসে অভিযুক্ত অপহরণকারীরও। দুজনের স্নেহ-কান্নার দৃশ্য দেখে থমকে গিয়েছিল জয়পুরের সাঙ্গানের থানার পুলিশও। শেষমেশ একপ্রকার টেনে হিঁচড়েই অপহরণকারীর কাছ থেকে আলাদা করে তাঁরা।
রাজস্থান পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, ১৪ মাস আগে পুনম চৌধুরি নামে এক মহিলার বাড়ির সামনে থেকে তাঁর শিশুপুত্র পৃথ্বীকে অপহরণ করেন আগ্রার বাসিন্দা তাঁরই এক আত্মীয়। তাঁর নাম তনুজ চাহার। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের হেড কনস্টেবল ছিলেন তিনি। শিশুটিকে অপহরণ করে বৃন্দাবনের পরিক্রমা পথের কাছে যমুনা নদীর তীরে একটি কুঁড়েঘর বানিয়ে সাধু সেজে থাকছিলেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ‘ভেষজ’ দাঁতের মাজনে মাছের নির্যাস! ফের বিতর্কে রামদেবের পতঞ্জলি]
লম্বা চুল, দাড়ি, গোঁফ রেখে বদলে ফেলেছিলেন নিজের লুক। সাদা দাড়ি মাঝে মাঝে কলপ করতেন। কারও সঙ্গে কথা বলতেন না। পৃথ্বীকে তাঁর নিজের পুত্র বলে পরিচয় দিতেন। গ্রেপ্তারি এড়াতে মোবাইল ফোনও ব্যবহার করতেন না তনুজ। মাঝে মাঝেই আলিগড়ে গিয়েও লুকিয়ে থাকতেন।
গত ২৭ আগস্ট উত্তরপ্রদেশ ও রাজস্থান পুলিশ গোপন সূত্রে তনুজের খবর পায়। তার আগেই পুলিশ ঘোষণা করেছিল তনুজকে ধরতে সাহায্য করলে ২৫ হাজার টাকা পুরস্কার মিলবে। আলিগড়ে পুলিশ পৌঁছতেই পৃথ্বীকে কোলে করে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন তনুজ। প্রায় আট কিলেমিটার ধাওয়া করে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এর পরই তাঁকে হেড কনস্টেবল পদ থেকেও বরখাস্তও করা হয়। তদন্তকারী অফিসার অতিরিক্ত ডিসিপি (সি পুনম চাঁদ বিষ্ণোই ও অতিরিক্ত (দক্ষিণ) পারস জৈন জানান, পৃথ্বী ও তার মা পুনমকে নিজের কাছে চেয়েছিলেন তনুজ। কিন্তু পুনম রাজি না হওয়ায় পৃথ্বীকে অপহরণ করেন তিনি।