সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্যাটে বিশাল হয়তো রান নেই, অসংখ্য উইকেটের মালিকও নন। কিন্তু ব্যকরণ মেনে ক্রিকেট খেলতে তাঁর জুড়ি ছিল না। ৭২ বছর বয়সে সিএবি-র (CAB Annual Award Cermony 2022-2023) কাছ থেকে ‘জীবনকৃতি’ সম্মান পেলেন রাজু মুখোপাধ্যায় (Raju Mukherjee)। শনিবার অর্থাৎ ৯ সেপ্টেম্বর রাজুর হাতে ট্রফিসহ মানপত্র, উত্তরীয় ও সাম্মানিক দুই লক্ষ টাকা দিয়েছেন সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় (Snehasish Ganguly)। রাজুর সঙ্গে ‘জীবনকৃতি’ সম্মান পেলেন শর্মিলা চক্রবর্তী (Sharmila Chakraborty)। তাঁর হাতেও ট্রফিসহ মানপত্র, উত্তরীয় ও সাম্মানিক তুলে দিয়েছেন সিএবি সভাপতি।
শর্মিলা চক্রবর্তীর হাতে পুরষ্কার তুলে দেওয়ার সময় জানা গেল এক অজানা গল্প। রাজু বলছিলেন, “এই শর্মিলার বলে আমি নেটে একবার আউট হয়ে গিয়েছিলাম! সবাই সেইসময় আমাকে রাগাত, তুই তো মেয়ের বলে আউট হয়ে গিয়েছিস। কিন্তু বিশ্বাস করুন, শর্মিলার মতো বাঁহাতি স্পিনার আমি ক্রিকেট জীবনে কম দেখেছি। দারুণ বুদ্ধি দিয়ে বোলিং করত।”
[আরও পড়ুন: পাকিস্তানের তিন আগুনে পেসারকে খেলা বাড়তি চাপের! সত্যিটা মেনে নিলেন শুভমান]
রাজু অবশ্য আরও একটি কারণে ফের একবার কাছে আলাদা ভাবে জায়গা করে নিলেন। সিএবি-র থেকে পাওয়া অর্থ আবার ইডেনের মালিদের দান করে দিয়েছেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছেন, ক্রিকেটে মালিদের অবদান কম নয়। ওঁদের জন্যই ভাল মাঠে ক্রিকেট খেলতে পেরেছি। সারাদিন ধরে পরিশ্রম করে চলেছে নিরলসভাবে। মালিদের অবদান ভোলার নয়। আর তাই সিএবি-র থেকে পাওয়া দুই লক্ষ টাকা ইডেনের মালিদের দান করে দিলেন তিনি।
ভাল পারফরম্যান্সের জন্য ‘এক্সসেল ইন ক্রিকেট’ ক্য়াটেগরিতে বছরের শ্রেষ্ঠ ক্রিকেটার সুদীপ কুমার ঘরামি (Sudip Kumar Gharami)। ‘জেন্টলম্য়ান ক্রিকেটার অফ দ্য় ইয়ার’ হলেন অনুষ্টুপ মজুমদার (Anustup Majumdar)। রঞ্জি ট্রফিতে বাংলার হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়া আকাশ দীপকে (Akash Deep) বেছে নেওয়া হল বছরের সেরা জোরে বোলার হিসেবে। চলতি বছর জানুয়ারিতে মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছে ভারত। দলে ছিলেন তিন বঙ্গকন্যা- রিচা ঘোষ (Richa Ghosh), তিতাস সাধু (Titas Sadhu) এবং হৃষিতা বসু (Hrishita Basu)। বিশ্বজয়ী তিন মেয়েকেও বিশেষ পুরস্কার দিল সিএবি।
[আরও পড়ুন: সমারবিক্রমার ব্যাট, শনাকার বোলিংয়ের কাছে হেরে এশিয়া কাপ থেকে বাংলাদেশের বিদায়]
বাংলা ক্রিকেটের ‘জ্যাক হবস’ বলা হয় রাজুকে। আসল নাম সত্য়ব্রত মুখোপাধ্য়ায়। যদিও বাংলার ও ভারতের বাইশ গজ তাঁকে রাজু নামেই চেনে। ক্রিকেটার, কোচ, নির্বাচক, ম্য়াচ রেফারি ও লেখক। একাধিক পরিচয় তাঁর। ৫০টি প্রথম শ্রেণির ম্য়াচে ২০৬০ রান রয়েছে তাঁর। সাত-আটের দশক মাতিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। বাংলার অধিনায়কও ছিলেন রাজু। আদ্যন্ত শ্রদ্ধেয় ও বরেণ্য ক্রিকেটার এদিন ধনধান্য স্টেডিয়াম মাতিয়ে দিলেন তাঁর হৃদয় ছুঁয়ে নেওয়া দুই প্রস্তাবে।