সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০০২ সালের বিলকিস বানো গণধর্ষণ কাণ্ডের (Bilkis Bano Gang Rape) এগারো জন দোষীকে জেল থেকে মুক্তি দিয়েছে গুজরাট সরকার। তারই কয়েক ঘণ্টা আগে স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে নারীশক্তির জয়গান গাইতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (PM Modi)। এটাই বিজেপির আমলে ‘নতুন ভারতের’ আসল মুখ। এভাবেই মোদি তথা বিজেপিকে খোঁচা দিতে দেখা গেল বিরোধীদের। এই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা।
এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। দলের মুখপাত্র সাকেত গোখেল টুইটারে ক্ষোভ উগরে দিয়ে লিখেছেন, ”২০০২ গুজরাট গণহত্যার সময় বিলকিস বানোকে ধর্ষণ করে তাঁর পরিবারকে খুন করে কবর দেওয়া হয়। গুজরাট সরকার এই ঘৃণ্য অপরাধে দোষী সাব্যস্ত ১১ জন দানবকে মুক্তি দিয়েছে। কোথায় গেল নয়ডার সংবাদমাধ্যম ও সাধারণ মানুষের রাগ? এমনকী কোনও ফিসফিসও নেই।”
[আরও পড়ুন: মহাকরণে বড়সড় অগ্নিকাণ্ড, পুড়ে ছাই একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথি]
কংগ্রেসের (Congress) মুখপাত্র পবন খেরা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর জানানো উচিত তিনি তাঁর ভাষণে মেয়েদের নিরাপত্তা, সম্মান ও শক্তি সম্পর্কে যে কথা বলেছেন তাতে তিনি নিজে বিশ্বাস করেন কিনা। তাঁর কথায়, ”গুজরাটের (Gujarat) বিজেপি সরকার বিলকিস বানোর গণধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত ১১ জন দোষীকে মুক্তি দিয়েছে। বিজেপি সরকারের মনোবৃত্তিই এর ফলে প্রকাশ্যে এসেছে। গতকাল লালকেল্লায় প্রধানমন্ত্রী বড় বড় কথা বললেন মহিলাদের নিরাপত্তা, শক্তি, সম্মান নিয়ে। অথচ কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গুজরাট সরকার এই সিদ্ধান্ত নিল। আমরা এও দেখেছি ধর্ষণে অভিযুক্তদের কীভাবে সম্মান দেওয়া হচ্ছে। এটাই কি অমৃত মহোৎসব?”
এদিকে সিপিএমও খোঁচা মেরে জানিয়েছে, ”এটাই নতুন ভারতের আসল মুখ। খুনি ও ধর্ষকরা ছাড়া পায়। অথচ সমাজকর্মী তিস্তা শীতলবাদ যিনি ন্যায়ের জন্য লড়াই করছেন তাঁকে জেলবন্দি হতে হয়।” পাশাপাশি AIMIM সুপ্রিমো আসাদউদ্দিন ওয়েইসি টুইটারে লিখেছেন, ”উনি নারীশক্তির সমর্থনে কথা বললেন। গুজরাট সরকার একই দিনে গণধর্ষণের দোষীদের মুক্তি দিল। বার্তাটা পরিষ্কার।”
[আরও পড়ুন: কাশ্মীরের জওয়ানদের দুর্ঘটনার নেপথ্যে গাফিলতি? প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য]
উল্লেখ্য, সোমবার গোধরা জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় বিলকিস বানোর ধর্ষণকারীদের। ২০০৮ সালে তাদের সকলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছিল। ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ উপলক্ষে গত জুনে কেন্দ্র যে গাইডলাইন দিয়েছিল তাতে বলা রাজ্যগুলির কাছে প্রস্তাব রাখা হয়েছিল জেলবন্দি আসামিদের একাংশের মুক্তির। তবে তাতে পরিষ্কার করা ছিল, কোনও ভাবেই যেন কোনও ধর্ষককে ছাড়া না হয়। এরপরও গুজরাট সরকার কী করে ওই গণধর্ষণকারীদের মুক্তি দিল? উঠছে প্রশ্ন।