সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এমন বন্ধু আর কে আছে...! এআই প্রসঙ্গে একথা বলা যায় চোখ বন্ধ করে। কারণ, যে কোনও সমস্যায়, যে কোনও বিষয়ে সাহায্য চাইলেই সঙ্গে সঙ্গে জবাব দেয় সে। কিন্তু সব পরিস্থিতিতে সত্যিই কি এই কৃত্তিম মেধা বন্ধু হিসেবে সেরা? উত্তর হল, না। নিশ্চয়ই ভাবছেন কেন? কারণ একটাই, মন নেই এআইআর। আবেগ দিয়ে বিবেচনা করার ক্ষমতাও নেই। ধরুন আপনি প্রেম বা যে কোনও সম্পর্কের জটিলতা নিয়ে প্রশ্ন করলেন, তার যথাযথ সমাধান কিন্তু দিতে পারে না এআই। কারণ, মনের হদিশ পায় না এআই। তাই কয়েকটি বিষয়ে পরামর্শ চাইবেন না কৃত্রিম মেধার কাছে।
১. ভারতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যৌথ পরিবার। সেখানে যে কোনও বিষয়েই বাবা-মা, ভাই-বোন, জেঠু-কাকুর মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। সেটা কারও বিয়ের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেও। এখানে বিয়ে শুধু ২ জন মানুষের সিদ্ধান্ত নয়, ২ পরিবারের বন্ধন। সেখানে মতানৈক্যও স্বাভাবিক। কিন্তু অনেকক্ষেত্রেই এআইকে এনিয়ে প্রশ্ন করলে উত্তর মেলে, 'পছন্দ না হলে সরে যান', কিন্তু ভারতীয় সমাজে তা কার্যত সম্ভব নয়। প্রেমের ক্ষেত্রেও বিষয়টা একই। এআই সর্বদা টক্সিক সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। কিন্তু পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে তা অনেক সময় হয়ে ওঠে না। তবে এর অর্থ কখনই অন্যায়ের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া নয়। তবে যে পদ্ধতিতে বা যতটা সহজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে ইতি টানার কথা বলে, তা আদতে সম্ভব নয়।
২. আপনি আপনার পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে সমাধান চাইলেই এআই উত্তর দেয়। কিন্তু মনে রাখবেন, সে কিন্তু ততটুকুই জানে যতটা আপনি বলছেন। এর বাইরেও কিন্তু অনেককিছু থাকে। হয়তো প্রেমিকের কোনও আচরণে আপনি বিরক্ত, সেটাই আপনি জানাচ্ছেন এআইকে, কিন্তু আপনার প্রেমিকেরও কিছু বক্তব্য থাকতে পারে। মু্দ্রার উলটো দিকের কথা কিন্তু জানে না এআই। সবক্ষেত্রেই আমরা রাগের ভ্যালিডেশন চাই। যদি আপনি বিচ্ছেদ নিয়ে নিশ্চিত থাকেন, স্রেফ চান যে কেউ আপনাকে বলুক যে আপনিই ঠিক, তাহলে এআইকে প্রশ্ন করতে পারেন। অন্যথায়, এপ্রশ্ন বৃথা। সম্পর্কের যে কোনও সমস্যার সমাধানের পথ কিন্তু একটাই, মুখোমুখি বসে কথা বলা।
৩. অনেক সময় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় যেখানে মন ও মাথা দুটো আলাদা কথা বলে। এআইয়ের মন নেই, তাই যে মন দিয়ে বিবেচনা করার ক্ষমতাও রাখে না। তাই পরামর্শ দেয় পরিস্থিতি বিবেচনা করে। মন কী চায়, কারও জন্য আপনার ব্যাকুলতা, মন খারাপের রাতে নিজের সঙ্গে লড়াই কিন্তু বোঝে না কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। তাই এসব ক্ষেত্রে এআইকে প্রশ্ন না করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
৪. এক রক্তমানুষের মানুষ ও এআই-এর মধ্যে মূল যেটা পার্থক্য তা হল, মানব বন্ধু যে পরামর্শ দেয় সে জানে এর পর কী ঘটতে পারে। সেটা বিবেচনা করেই পরামর্শ দেয়। কিন্তু এআই কিন্তু তা জানে না। তাই পরবর্তী পরিস্থিতি বিবেচনা না করেই পদক্ষেপের পরামর্শ দেয়। তা মেনে চললে কেলেঙ্কারির সম্ভাবনা প্রবল।
