সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হারিয়ে ফেলার ভয় প্রতিটা মানুষের সঙ্গী। ছোটবেলায় প্রিয় পেন থেকে শুরু করে যৌবনে প্রিয় মানুষের জীবনে নিজের অবস্থান, সাজানো কেরিয়ার, সবকিছু হারানোর ভয় কমবেশি সকলেরই থাকে। তবে কারও জীবনে হারানোর ভয়টা কয়েকগুণ বেশি। যার পরিণতি কখনও কখনও ভয়ংকর হয়ে যায়। আপনি নিজেই এর শিকার নন তো? বা আপনার অতি পরিচিত কেউ? বুঝে নিন এই আচরণে।
১. যারা অতিরিক্ত নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন তারা ছোট ছোট বিষয়েও অন্যের সম্মতির অপেক্ষা করেন। ধরুন সাজগোজ করেছেন, তারপর বহুবার সকলকে প্রশ্ন করেন, "আমাকে সত্যিই ভালো লাগছে?" অর্থাৎ আপনি নিশ্চিত হতে পারছেন না। বা ধরুন আপনি কারও প্রশংসা করলেন, উত্তরে যদি তিনি বলেন, "সত্যিই কি তাই?", এটা নিরাপত্তাহীনতার লক্ষণ। আসলে এদেশে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই খুদেদের ভাইবোনেদের সঙ্গে তুলনা করা হয়। যা নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করে দেয়।
২. নিরাপত্তাহীনতা ও হিংসা কিন্তু একই মুদ্রার দুটো পিঠ। যারা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন তাঁরা কখনই অন্যের জয়কে উপভোগ করতে পারেন না। বন্ধু, প্রিয়জন হোক বা ঘনিষ্ঠ বৃত্তের যে কারও উন্নতি তাঁর মনে ভয়ের জন্ম দেয়। আপনার অর্জনকে এরা 'ভাগ্যের জোর' বলতেই পছন্দ করে।
৩. আপনার পরিচিত কেউ অযথা দুঃখপ্রকাশ করে ছোট ছোট বিষয়েও? সামান্য কিছু হলেও ব্যাখ্যা দিতে শুরু করে? আসলে এটা নিরাপত্তাহীনতার লক্ষণ। কেউ ভুল বুঝবে, প্রত্যাখ্যান করবে, এই আশঙ্কা থেকেই এরা নিজের দিকটা ভালো করে সকলের সামনে তুলে ধরতে চায়।
৪. এদের প্রশাংসা করলেও তা সহজে মেনে নিতে পারেন না এরা। উলটে সেটাকে আপনার ভালোমানুষি ভাবতেই ভালোবাসেন। কারণ, এরা ভাবতেই পারেনা যে এরাও প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য।
৫. ধরুন পাঁচজনের মাঝে আপনি একজনকে উদ্দেশ্য করে কিছু বললেন। সেক্ষেত্রেও এরা ভেবে নেন যে নিশানায় তিনিই। সাধারণ মন্তব্যকেও এরা সমালোচনা ভাবেন। ফলে রেগে যান, হতাশ হয়ে পড়েন, অবসাদ গ্রাস করে।
৬. তবে একেবার উলটো প্রবণতাও দেখা যায় কারও কারও ক্ষেত্রে। অনেকেই চূড়ান্ত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগলেও লোকের সামনে 'পারফেক্ট' ইমেজ বহন করতেই পচন্দ করেন। তাঁরা দেখান, সবটা ঠিক আছে, সবটা গোছানো, নিজেকে অতিরিক্ত হাসিখুশি প্রমাণের চেষ্টা করেন। আদতে কিন্তু সবটাই পাঁচজনের কাছে প্রমাণের চেষ্টা মাত্র!
আসলে নিরাপত্তাহীনতা কিন্তু কোন ভুল বা স্বভাব নয়। এটা আদতে ক্ষত। কিছু আঘাত তাঁদের নিরাপত্তাহীন করে তোলে। এই ধরণের মানুষেরা সাধারণত অন্যকে আঘাত করেন না।
