সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যতদিন যাচ্ছে প্রত্যেক মানুষের কাছে বদলাচ্ছে জীবনের সংজ্ঞা। তেমনই যেন সম্পর্কের সংজ্ঞাও বদলাচ্ছে দ্রুত। মনের মানুষ নিমেষেই হয়ে যাচ্ছেন একঘেয়ে। তার ফলে বাড়ছে বিচ্ছেদ। সমীক্ষা বলছে, এক ছাদের তলায় থাকলেও অনেক যুগলই নাকি স্লিপ ডিভোর্সের পথে হাঁটছেন।

কী এই স্লিপ ডিভোর্স?
এক ঘরে থেকেও পৃথক বিছানায় রাত্রিযাপনই হল স্লিপ ডিভোর্স। ResMed 2025 Global Sleep Survey সম্প্রতি কমপক্ষে ৩০ হাজার যুগলকে নিয়ে সমীক্ষা করে। তার ফলাফল দেখে বহু বিশেষজ্ঞের চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। কারণ, সমীক্ষার ফল বলছে, ভারতীয়দের মধ্য়ে স্লিপ ডিভোর্সের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চিন। আর কোরিয়া তৃতীয় স্থানে। চিনে ৬৭ শতাংশ এবং কোরিয়ায় ৬৫ শতাংশ যুগলের বিছানা আলাদা। আমেরিকা, ব্রিটেনে স্লিপ ডিভোর্সের হার ৫০ শতাংশ। যা তুলনামূলকভাবে বেশ কিছুটা কম।
কিন্তু কী কারণে বাড়ছে স্লিপ ডিভোর্স? প্রত্যেক যুগলের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে,
১. কেউ কেউ দাবি করেন তাঁর সঙ্গী কিংবা সঙ্গিনী ঘুমের মধ্যে নাক ডাকেন যার ফলে এক বিছানায় ঘুমনো কার্যত অসম্ভব।
২. আবার কারও দাবি, জোরে শ্বাস নেন সঙ্গী অথবা সঙ্গিনী। যা নাকি ঘুমের পরিবেশকে নষ্ট করে।
৩. কারও কারও আবার শোওয়ার সময় টিভি দেখা, মোবাইল ঘাঁটার মতো বদভ্যাস রয়েছে। যা একই বিছানায় থাকা মানুষটির জন্য বিরক্তিকর।
তবে 'স্লিপ ডিভোর্সে'র ভালো এবং খারাপ দুটি দিকই রয়েছে। জেনে নেওয়া যাক এই বিষয়ে কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভালো দিক
১. ঘুম ভালো হয়।
২. শারীরিক সম্পর্ক নিয়ে উত্তেজনা বজায় থাকে।
খারাপ দিক
১. বিশেষজ্ঞদের মতে, এক বিছানায় ঘুমোলে সঙ্গীর প্রতি টান বাড়ে। কারণ, সেই সময় আমাদের শরীর থেকে অক্সিটোসিন বা লাভ হরমোন নির্গমন বাড়ে। এক বিছানায় না ঘুমোলে তা সম্ভব নয়।
২. অক্সিটোসিন নির্গমনের ফলে স্বাভাবিকভাবেই দুশ্চিন্তা, অবসাদ দূর হয়। কিন্তু 'স্লিপ ডিভোর্সে'র ফলে হচ্ছে তার উলটো।
৩. দুশ্চিন্তা, অবসাদের মতো সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার ফলে বাড়ে আয়ু। 'স্লিপ ডিভোর্সে'র ফলে সম্পর্ক মধুময় হওয়ার বদলে বাড়ছে মানসিক দূরত্ব।
তাই একছাদের তলায় থেকেও 'স্লিপ ডিভোর্সে'র সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভালো করে ভেবে নিন। নইলে বিচ্ছেদের দোরগোড়ায়ও পৌঁছে যেতে পারে সম্পর্ক।