shono
Advertisement

আইএসআইয়ের কার্যকলাপ রুখতে কড়া কেন্দ্র, কলকাতায় কমেছে পাক বধূদের আত্মীয়দের যাতায়াত

সারা কলকাতাজুড়ে এখন রয়েছেন প্রায় ৬০ জন পাকিস্তানি মহিলা।
Posted: 01:36 PM Mar 25, 2024Updated: 01:38 PM Mar 25, 2024

অর্ণব আইচ: কেন্দ্রীয় সরকারের কড়া মনোভাব। তার উপর পাক চর আইএসআইয়ের কার্যকলাপের উপর বিশেষ নজর কেন্দ্রীয় ও কলকাতার গোয়েন্দাদের। তাই কলকাতায় কমেছে পাকিস্তানি বধূদের ‘আত্মীয়’দের আনাগোনা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রে খবর, সারা কলকাতাজুড়ে এখন রয়েছেন প্রায় ৬০ জন পাকিস্তানি মহিলা। যদিও বিভিন্ন বয়সের ওই মহিলারা এখন শহরের বাসিন্দাদেরই বধূ। উল্লেখ‌্য, কয়েক মাস আগে পার্ক সার্কাস এলাকার এক যুবক পাকিস্তানের এক যুবতীকে বিয়ে করেন। পাক সীমান্ত পেরিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে কলকাতায় আসেন ওই যুবক ও তাঁর পরিবারের লোকেরা।

Advertisement

যদিও গোয়েন্দাদের সূত্র জানিয়েছে, কলকাতার বাসিন্দাদের পাকিস্তানি বউরা শহরে টানা ১৫ বছর বসবাসের পর ভারতীয় নাগরিকত্বের জন‌্য আবেদন করতে পারেন। যদিও তাঁদের পক্ষে নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ হয় না। তার উপর ওই পাক মহিলা ও তাঁদের পরিবারের লোকেদের উপরও চলে গোয়েন্দাদের নজরদারি। ইচ্ছামতো পাকিস্তানে বাপের বাড়িতে যাতায়াতও তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই এই পাক মহিলাদের বাপের বাড়ির লোকেরা মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে আসতে চান কলকাতায়। গোয়েন্দাদের মতে, পাকিস্তান নিয়ে কেন্দ্রের কড়া মনোভাবের কারণে এখন অনেক কমে গিয়েছে এই পাক বধূদের বাপের বাড়ির আত্মীয় বা পরিজনদের যাতায়াত।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের সমীক্ষা অনুযায়ী, বহু আগে বছরে ১০০ থেকে ১৫০ জন পাক নাগরিক, এই মহিলাদের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে কলকাতায় আসতেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার কয়েক বছর আগে থেকে কেন্দ্রীয় সরকার পাক নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে রাশ টানে। তাই ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই সংখ‌্যা কমবেশি ৫০-এ নেমে আসে। ২০২০ সালে করোনা পরিস্থিতি শুরু হয়। চলে ২০২১ সাল পর্যন্ত। ওই দুবছর কোনও পাক নাগরিককে কলকাতায় আসার অনুমতি দেওয়া হয়নি। ২০২২ সালে মেয়ে ও মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকেদের দেখার বিশেষ কারণ দেখানোয় জনা পনেরো পাক নাগরিককে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। গত বছর করোনা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়ে আসে।

কিন্তু ৩৫-এর বেশি পাক নাগরিক তথা এই পাকিস্তানি মহিলাদের আত্মীয় ও পরিজনদের কলকাতায় আসার অনুমতি দেওয়া হয়নি। এমনকী সূত্রের খবর, ক্রিকেট বিশ্বকাপের আগে গোয়েন্দা পুলিশের ধারণা ছিল, কিছু সংখ‌্যক পাক নাগরিক কলকাতায় খেলা দেখার জন‌্য আসতে পারেন। কিন্তু কার্যত, খেলা চলাকালীন একজন পাক নাগরিকও দর্শক হিসাবে কলকাতায় আসেননি। 

গোয়েন্দাদের সূত্র খবর, এই কড়া মনোভাবের মূল কারণই পাক চর সংস্থা আইএসআইয়ের কার্যকলাপ। এর আগেও কলকাতা থেকে গ্রেপ্তার হয়েছে একাধিক আইএসআইয়ের এজেন্ট। কলকাতার পাক বধূদের পাক নাগরিক আত্মীয় ও পরিজনদের ব‌্যাপারে কোনও ঝুঁকি নিতে চান না কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারাও। কারণ আইএসআই আত্মীয় সাজিয়ে কোনও এজেন্টকে কলকাতায় পাঠাতে পারে, এমন সম্ভাবনাও রয়েছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের। আইএসআইয়ের কোনও কার্যকলাপ যাতে দেশের কোথাও না থাকে, সেই কারণেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা সব আত্মীয় ও পরিজনদেরও অনুমতি দিচ্ছেন না।

পাক বধূরা তাঁদের পরিবারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখেন। তাই তাঁদের গতিবিধির উপরও নজর রয়েছে গোয়েন্দাদের। তাঁরা কলকাতা ছেড়ে দেশের অন‌্য শহরে গেলেও একটি পোর্টালের মাধ‌্যমে অনুমতি নিতে হয়। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের নিয়ন্ত্রিত ওই পোর্টালটি অত‌্যন্ত সুরক্ষিত। তাই ওই পাক বধূরা কোনও নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে শহরের বাইরে যেতে পারলেও ইচ্ছামতো ঘুরেবেড়ানো তাঁদের পক্ষে বিশেষ সম্ভব হয় না। আইএসআই এজেন্টদের রুখতেই এত কড়াকড়ি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement