সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অপরাধীদের রাজনীতিতে ‘আশ্রয়’। বা রাজনীতিকদের অপরাধপ্রবণতা। এই দু’টোই ভারতের জ্বলন্ত সমস্যা। এ নিয়ে বিস্তর লেখালেখি, আন্দোলন সবই হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। এবার খোদ আদালত এই প্রবণতা নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করল। এলাহাবাদ হাই কোর্টের (Allahabad High Court) লখনউ বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এদেশে নেতা, অপরাধী এবং আমলাদের মধ্যে একটা অশুভ আঁতাঁত চলছে। যেটা বন্ধ হওয়া দরকার।
এলাহাবাদ হাই কোর্টের লখনউ বেঞ্চ বলছে, “কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে আজকের দিনে রাজনীতি অপরাধীতে ছেয়ে গিয়েছে। ব্যক্তি রাজনীতি, বাহুবল, টাকা, নেটওয়ার্ক, রাজনীতি এবং অপরাধজগতের আঁতাঁত এসবই সুস্থ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং আইনের শাসন স্থাপন করার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। আজকের দিনে লোকসভা, বিধানসভা থেকে শুরু করে পঞ্চায়েতের মতো স্থানীয় নির্বাচনও প্রচুর ব্যয়বহুল।” আদালতের সাফ কথা, “সংগঠিত অপরাধ, রাজনীতিবিদ (Politician) এবং আমলাদের মধ্যে একটা অশুভ আঁতাঁত তৈরি হয়েছে। যার জেরে প্রশাসন এবং বিচারব্যবস্থার উপর মানুষ আস্থা হারাচ্ছে।”
[আরও পড়ুন: মারতে মারতে ভাঙল বেত, বাদ গেল না চড়-থাপ্পড়! শিক্ষকের নৃশংস মারে অজ্ঞান ৫ বছরের শিশু]
বিএসপি (BSP) সাংসদ অতুল কুমার সিংয়ের জামিনের আরজি নাকচ করে এই মন্তব্য করেছে বিচারপতি দীনেশ কুমার সিংয়ের ডিভিশন বেঞ্চ। বিএসপির ওই সাংসদের বিরুদ্ধে এক মহিলাকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ ছিল। অতুলের মতো লোকেদের রাজনীতি থেকে বিতড়ণের পক্ষে সওয়াল করে সংসদের কাছে রাজনীতিকে অপরাধমুক্ত করার আরজি জানিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। এলাহাবাদ হাই কোর্টের বক্তব্য, এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট আগে হস্তক্ষেপ করার আরজি জানালেও সংসদ বা নির্বাচন কমিশন কেউই এ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি।
[আরও পড়ুন: ‘বিজেপিতে আর কত জঙ্গি লুকিয়ে?’, গেরুয়া শিবিরকে খোঁচা তৃণমূলের]
এলাহাবাদ হাই কোর্ট রাজনীতির সঙ্গে অপরাধীদের জড়িয়ে যাওয়ার পরিসংখ্যানও প্রকাশ করেছে। আদালত জানিয়েছে, ২০০৪ সালে যেখানে ২৪ শতাংশ লোকসভা (Lok Sabha) সাংসদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ ছিল, সেখানে ২০০৯ সালে সাংসদদের মধ্যে অপরাধে জড়িত ছিলেন ৩০ শতাংশ। ২০১৪ সালে সংখ্যাটা বেড়ে হয় ৩৪ শতাংশ। ২০১৯ সালে সেটা আরও বেড়ে হয় ৪৩ শতাংশ।