অভিরূপ দাস: মূত্রনালিতে সংক্রমণ। চিকিৎসা হয়েছে মানসিক রোগের। মায়ের চিকিৎসায় এমনই চূড়ান্ত বিভ্রাটের জন্য এক খ্যাতনামা চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ আনলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। প্রতিবিধান চেয়ে চিঠি লিখলেন খোদ রাজ্যপালকে। জানিয়েছেন মেডিক্যাল কাউন্সিলেও। অভিযুক্ত চিকিৎসক অবশ্য এসব কিছু নস্যাৎ করে পালটা বিঁধেছেন অভিযোগকারিণীকে। সোশ্যাল সাইটে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে একের পর এক পোস্ট করেছেন অধ্যাপক। তাতে ক্ষুব্ধ চিকিৎসক বলেছেন, “আমি যে ভুল চিকিৎসা করেছি তা প্রমাণিত নয়। অথচ উনি আমার সম্বন্ধে সোশ্যাল সাইটে যা খুশি লিখে চলেছেন। এতদিন পর্যন্ত তার কোনও প্রতিক্রিয়া জানাইনি। ফেসবুকে এই ধরনের জিনিসের বিচার হয় না। এটা এই মুহূর্তে বন্ধ হওয়া দরকার। উনি এটা ঠিক করছেন না।”
[আরও পড়ুন- মেট্রো স্টেশনে ঢোকার গেটেও সমস্যা, ভোগান্তিতে যাত্রীরা]
বিতর্কের দু’পক্ষের একজন হলেন সাউথ ইস্ট এশিয়ান স্টাডিজের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক লিপি ঘোষ। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট মেম্বারও। অন্যজন নেফ্রোলজিস্ট ডা: পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়। গত ১২ জুলাই থেকে অসুস্থ তাঁর মা নীলিমা ঘোষ (৭৯)। লিপিদেবী জানিয়েছেন, “আমার মায়ের শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। বুকে সোঁ সোঁ আওয়াজ। অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন উনি। ডাঃ পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়কে বাড়িতে আসতে বলি।” অভিযোগ, শ্বাসকষ্টের কথা শোনার পরেও বাড়িতে এসে একবারও বুকে স্টেথোস্কোপ লাগিয়ে দেখেননি চিকিৎসক। লিপিদেবীর কথায়, “ডাঃ মুখোপাধ্যায় বারবারই আমার মায়ের পিঠে স্টেথোস্কোপ লাগিয়ে দেখছিলেন। এরপর উনি আমায় ‘সেরেনাস ড্রপ’ নামে একটি ওষুধ মাকে পাঁচফোঁটা করে খাওয়াতে বলেন। উনি বারবারই আমায় বোঝাচ্ছিলেন বয়সের কারণে আমার মায়ের মানসিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।”
অভিযোগকারিণীর দাবি, ওই ওষুধ খাওয়ানোর পর থেকেই তাঁর মায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। মায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতির কথা জানালে ডা. মুখোপাধ্যায় তাঁর মাকে ফুলবাগানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করতে বলেন। লিপিদেবীর কথায়, “আমার বাড়ি হাবড়ায়। তারপরও ডাক্তারবাবু কেন ফুলবাগানের বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করতে বললেন জানি না।”
[আরও পড়ুন-একুশের সমাবেশে নিরাপত্তায় বিশেষ জোর, পথে ৫০০০ পুলিশ]
যদিও ডাক্তার মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “ওই হাসপাতাল আমার বাড়ির কাছে। যাতে ওনার মাকে সবসময় চোখে চোখে রাখতে পারি সেই কারণেই ওখানে ভরতি করতে বলেছিলাম। এঁরা কেউই চিকিৎসা শাস্ত্র সম্বন্ধে কিছুই জানেন না।”
মায়ের শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হলে নিজের এক ছাত্র মারফত পিজি হাসপাতালের ডাঃ দুবের সঙ্গে যোগাযোগ হয় লিপিদেবীর। ডাঃ দুবে তাঁকে ডাঃ পার্থসারথি সেনগুপ্ত নামে এক চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। লিপি ঘোষ জানিয়েছেন, “ডাঃ সেনগুপ্ত আমার মা-কে দেখে বলেন মূত্রনালিতে সংক্রমণ হয়েছে। আমিও ইউরিন টেস্ট করিয়ে দেখতে পাই সত্যিই তাই। এরপরই দ্রুত অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়।”
The post সংক্রমণের অসুখে মানসিক রোগের চিকিৎসা! বিচারের আশায় রাজ্যপালের দ্বারস্থ বৃদ্ধার পরিবার appeared first on Sangbad Pratidin.