shono
Advertisement

রাতে ঘুমের মধ্যে বারবার প্রস্রাব পাওয়া কি স্বাভাবিক? জানুন চিকিৎসকদের মত

এই সমস্যায় ভুগছেন আপনিও? জানুন সমাধানের উপায়।
Posted: 08:08 PM Jul 21, 2021Updated: 08:09 PM Jul 21, 2021

যেন নিশির ডাক! রাতে বিছানায় পিঠ ঠেকালেই বারবার পায়। রাত্রিবেলায় ঘন ঘন প্রস্রাব পাওয়া মোটেই স্বাভাবিক নয়। সাবধান করলেন অ্যাপোলো গ্লেনিগলস হাসপাতালের ইউরোলজিস্ট ডা. ত্রিদিবেশ মণ্ডল। লিখলেন প্রীতিকা দত্ত।

Advertisement

একাধিকবার প্রস্রাব করতে যাওয়ার ঠেলায় রাতের ঘুম ভাঙছে। এদিকে সকালে কাজের কমতি নেই। কিন্তু রাতে সলিড ঘুম হচ্ছে না। সারাদিন ক্লান্তি। মেজাজ খিটখিটে। স্বাভাবিকভাবেই কোয়ালিটি অফ লাইফের বারোটা পাঁচ। চিকিৎসার পরিভাষায় ‘নকচুরিয়া’। অর্থাৎ একাধিক বার প্রস্রাবে যাওয়ার জন্য রাতে ঘুম নষ্ট। কারণ, অনেকগুলো। কারও ক্ষেত্রে জল বা মদ্যপান বেশি হচ্ছে। কেউ আবার হয়তো স্লিপ ডিসঅর্ডারে (Sleep disorder) ভুগছেন। কারও ক্ষেত্রে ব্লাডার বা মূত্রথলির সমস্যা। বলা হয়, বয়স যখন চল্লিশের কোঠায় তখন থেকেই নাকি ছেলেদের মধ্যে এই সমস্যার সূত্রপাত হয়। পঞ্চাশের পর থেকে সমস্যা আরও বাড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, বয়সকালে মোটামুটি তিনজন পুরুষের মধ্যে একজনের ‘নকচুরিয়া’র সমস্যা থাকতে পারে।

রোগের ধরন

সাধারণত চার ধরনের নকচুরিয়া দেখা যায়। ১. পলিইউরিয়া (২৪ ঘণ্টায় অনেকবার বাথরুমে দৌড়তে হয়) ২. নকচারন্যাল পলিইউরিয়া (প্রস্রাবের পরিমাণ রাতে বেশি) ৩. মূত্রথলি বা ব্লাডারের স্টোরেজে সমস্যা থেকে প্রস্রাবের সমস্যা ৪. মিক্সড নকচুরিয়া (উপরের তিনটে সমস্যাই রোগীর মধ্যে প্রকট হয়)

কী কারণে হয়? অনেকের ধারণা, সুস্থ থাকতে বেশি করে জল খাওয়া জরুরি। বলে রাখা ভাল, তেষ্টা অনুযায়ী জল খান। দিনে দেড় থেকে দু’লিটার জল খেলেই অনেক রোগ দূরে রাখা যায়। অ্যালকোহল, চা, কফি বেশি খেলে রাতে প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়তে পারে। কর্মসূত্রে অনেককে রাত জাগতে হয়। সেক্ষেত্রে শুধু জলই নয়, খাওয়াদাওয়াও অনেকে রাতে বেশি করে করেন। বডি ক্লক পরিবর্তন হলে শরীরে নানারকম সমস্যা দেখা যায়। নকচুরিয়া তার মধ্যে একটা। ডায়াবেটিস এবং ব্লাড প্রেসারের সমস্যা থাকলেও প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়ে। অ্যান্টি সাইকিয়াট্রিক ড্রাগ বা কিডনির (Kidney) ওষুধ খেলেও প্রস্রাব বেশি পায়। রাতে ঘুম থেকে উঠতে হয়। হার্টের প্রবলেম, কিডনিতে স্টোন এবং প্রস্টেটের সমস্যা থেকেও এমন হয়। তাছাড়াও মেয়েদের ক্ষেত্রে সন্তানধারণের সময় এবং মেনোপজের পর ‘নকচুরিয়া’র সমস্যা দেখা যায়।

[আরও পড়ুন: এবার বিষ খাওয়া রোগী হাসপাতালে ভরতি করলেই মলমূত্রের নমুনা যাবে ফরেনসিকে, তৈরি হচ্ছে ল্যাব]

চিকিৎসা কোন পথে? ‘নকচুরিয়া’ থেকে বাঁচতে প্রথমে কিছু সহজ লাইফস্টাইল পরিবর্তন করতে বলা হয়। যেমন, রাতে ঘুমোতে যাওয়ার দু’ঘণ্টা আগে জল পান কমিয়ে দিন। মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে সেটা ছাড়তে চেষ্টা করুন। ডাইইউরেটিক বা কিডনি সংক্রান্ত সমস্যার ওষুধ খেলে সেটা রাতে না খাওয়ার চেষ্টা করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। অনেকের প্রস্রাবের সমস্যা থেকে পা ফুলে যায়। সেক্ষেত্রে রাতে একাধিকবার প্রস্রাব পেতে পারে। তাই বলা হয়, কমপ্রেশন স্টকিংস করার অভ্যাস তৈরি করুন। যদি দিনের বেলায় ঘুম পায়, তাহলে ঘুমিয়ে নিন। কারণ, একাধিকবার প্রস্রাব করতে ওঠার জন্য রাতের ঘুমে ছেদ পড়ে। লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে রোগীর কোনও উন্নতি না হলে ডেসমোপ্রেসিনের মতো ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা শুরু করা হয়।

রোগনির্ণয় করতে হলে রোগী দিনে কতটা জল খাচ্ছেন, আর কত বার প্রস্রাব হল-এটা জানার জন্য তিনদিনের ব্লাডার ডায়েরি মেনটেন করতে বলা হয়। এই ডায়েরি দেখে রোগের ট্রেন্ড ধরতে পারেন চিকিৎসক। রুটিন ইউরিন কালচার টেস্ট করিয়ে দেখে নিতে হয়, রোগীর মূত্রনালিতে কোনও সংক্রমণ রয়েছে কিনা। অ্যানিমিয়া (Anemia), থাইরয়েড, কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস টেস্ট করিয়ে দেখা হয়। আল্ট্রাসোনোগ্রাফির মাধ্যমে কিডনি, ব্লাডারের অবস্থা জানতে হয়। এতেও সমস্যা না কমলে প্রস্রাবের থলি পরীক্ষা করে দেখা হয়।

[আরও পড়ুন: COVID-19: করোনামুক্তির পর আক্রান্তের শরীরে নানা জটিলতা, নজরদারির পরামর্শ চিকিৎসকদের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement