দীপঙ্কর মণ্ডল: বছরের পর বছর চেষ্টা করেও সন্তান জন্মাচ্ছে না। বাঙালি পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে যাওয়া এর অন্যতম কারণ। বিস্ফোরক এই তথ্য মিলেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের (Calcutta University) অধ্যাপকের সঙ্গে এক চিকিৎসকের যৌথ গবেষণায়।
সন্তান চেয়েও গর্ভধারণ হচ্ছে না, এমন ৪০০ জন দম্পতির উপর গত চার বছর ধরে গবেষণা হয়। কনডোম বা কোনও জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার না করে টানা এক বছর শারীরিক সম্পর্কের পরেও এঁরা গর্ভধারণে ব্যর্থ। বিশেষজ্ঞরা একেই বন্ধ্যাত্ব বলছেন। বাঙালি ঘরানায় সন্তান না হলে প্রথমে আঙুল ওঠে মহিলার দিকে। বেশিরভাগ সময় স্ত্রীকে দায়ী করা হয়। নয়া গবেষণা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে, সন্তান না হওয়ার পিছনে অন্তত ৫০ শতাংশ দায়ী পুরুষ।
[আরও পড়ুন: Corona Vaccine: কীভাবে বুঝবেন ভ্যাকসিন ভুয়ো কি না? গাইডলাইন জারি করল কেন্দ্র]
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা পুরুষের শুক্রাণু কমে যাওয়ার জন্য মদ এবং সিগারেটের পাশাপাশি দুশ্চিন্তা, ফাস্ট ফুড, কফিকেও দায়ী করেছেন। প্রতি মিলিলিটারে শুক্রাণুর সংখ্যা ১৫ মিলিয়ন বা দেড় কোটির কম হলেই গর্ভধারণে সমস্যা হতে পারে। যৌথ গবেষণায় যে চারশো দম্পতিকে বাছা হয়েছিল তাঁরা প্রত্যেকেই বন্ধ্যা। এঁদের অর্ধেকের বেশি পুরুষের শরীরে যে বীর্য পরীক্ষা করা হয়েছে তাতে দেখা গিয়েছে, শুক্রাণুর সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় বেশ কম। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সুজয় ঘোষ ও বিশিষ্ট চিকিৎসক বৈদ্যনাথ চক্রবর্তীর তত্ত্বাবধানে গবেষণাটি হয়েছে। আমেরিকার ‘মলিকিউলার জেনেটিক্স অ্যান্ড জেনোমিক্স মিডিসিন’ তা প্রকাশ করেছে।
যে দম্পতিরা সন্তান চাইছেন তাঁদের এক বছর চেষ্টার পরও গর্ভসঞ্চার না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে বলা হয়। বন্ধ্যাত্বের জন্য জীবনযাপনের ধরন, পরিবেশ এবং রাসায়নিক ব্যবহারে পরিবর্তনকে দায়ী করেন বিশেষজ্ঞরা। কীটনাশক এবং প্লাস্টিকে থাকা রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসা, ওবেসিটি বা স্থূলতা, ধূমপান, মানসিক চাপ, খাদ্যাভ্যাস, এমনকী অতিরিক্ত টিভি দেখা ক্ষতিকর বলে জানাচ্ছে গবেষণা।