সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘জুরাসিক পার্ক’ মনে পড়ে? মশার পেটে পাওয়া ডাইনোসরের রক্ত থেকে ডিএনএ নিয়েই আধুনিক পৃথিবীর বুকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল প্রাগৈতিহাসিক অতিকায় সেই প্রাণীদের। সেই মশা ছিল অ্যাম্বার তথা হলুদ রঙের স্ফটিকের মধ্যে। এবার তেমনই এক স্ফটিকের মধ্যেই সংরক্ষিত অবস্থায় দেখা মিলল ডাইনোসরদের আমলের এক কাঁকড়ার। ক্রিটেসিয়াস সেই প্রাগৈতিহাসিক কাঁকড়ার ছবি ভাইরাল নেট দুনিয়ায়।
জানা যাচ্ছে, আজ থেকে ১০ কোটি বছর আগে ওই কাঁকড়াটি (Crab) এই পৃথিবীতে ছিল। ডাইনোসরদের আমলেই সে ঘুরে বেড়াত এই দুনিয়ায়। এবার স্ফটিকের শরীরে লুকিয়ে থাকা তেমনই কাঁকড়ার দেখা মিলল চিনের জাদুঘরে। আজ থেকে ৬ বছর আগে, ২০১৫ সালে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার জঙ্গলে ওই কাঁকড়াটির ফসিল আবিষ্কৃত হয়। অবশেষে সেটির ঠাঁই হল জাদুঘরে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এই প্রথম এত প্রাচীন আমলের কাঁকড়ার ফসিলের সন্ধান মিলল।
[আরও পড়ুন: গ্যাসে ভরা বৃহৎ গ্রহে জলের অণু! বিখ্যাত বিজ্ঞান পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে আশার আলো]
‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই কাঁকড়াটি সংক্রান্ত গবেষণাপত্র। প্রাগৈতিহাসিক আমলের পৃথিবী কেমন ছিল তা বুঝতে সেই সময়কার পোকামাকড় থেকে গাছপালা সব কিছুরই ফসিল পর্যবেক্ষণ করে থাকেন গবেষকরা। কিন্তু এমন এক ‘সুসংরক্ষিত’ কাঁকড়া নিয়ে গবেষণা করতে পেরে উচ্ছ্বসিত তাঁরা। অন্যতম গবেষক হিথার ব্র্যাকেন গ্রিসমের কথায়, ”এই কাঁকড়াটির দেখা মেলা অত্যন্ত বিরল সৌভাগ্য। বলা যায়, স্ফটিকের মধ্যে থাকা কাঁকড়ার সন্ধান পাওয়া খড়ের গাদায় সুচ পাওয়ার সামিল।”
কেন এত উত্তেজিত গবেষকরা? আসলে অ্যাম্বার হচ্ছে এক ধরনের গাছের রজন। মাটির নিচে চাপা পড়ে প্রচণ্ড তাপ ও চাপে সেটি স্ফটিকের মতো হলুদ শিলায় পরিণত হয়। এর ভিতরে কোনও পতঙ্গ আটকে গেলে তারাও অ্যাম্বারের ভিতরে কার্যত মমিতে পরিণত হয়। এই কাঁকড়াটিও তাই। এটির চোখ, সন্ধিপদ-সহ নানা প্রত্যঙ্গ নিখুঁত ভাবে পর্যবেক্ষণ করা যাচ্ছে সহজেই।