সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মে মাস চলছে। বাইরে প্রখর দাবদাহ। তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ছুঁই ছুঁই। আচ্ছা, এই পরিস্থিতিতে যদি কয়েক মুহূর্তে বিদ্যুৎ সংযোগ ছাড়া থাকতে বলা হয় আপনাকে, পারবেন? যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে যদি কিছুক্ষণের জন্য মেনেও নেন, তা হবেন বাধ্য হয়ে। কিন্তু স্বেচ্ছায় বিদ্যুৎহীন কাটানোর কথা ভেবেছেন কখনও? হয়তো ভাবেননি, কিন্তু এরকমটাই করছেন পুণের হেমা সানে।
[আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর উজ্জ্বলা যোজনার ‘পোস্টার গার্ল’ই রান্না করেন উনুনে!]
জানা গিয়েছে, প্রাক্তন অধ্যাপিক হেমা সানের বয়স আশির কোটায়। দীর্ঘদিন ধরেই পুণের বুধওয়ার পেথে এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ছাড়াই বাস করছেন তিনি। তবে, বিদ্যুৎ ব্যবহার না করার পিছনে তাঁর একমাত্র কারণ প্রকৃতি এবং পরিবেশের প্রতি অগাধ ভালোবাসা। হেমা বলেন, “খাদ্য, আশ্রয় এবং পোশাক আমাদের মৌলিক চাহিদা। এক সময়ে তো বিদ্যুৎ ছিল না, অনেক পরে মানুষ বিদ্যুৎ পেয়েছে। আমি বিদ্যুৎ ছাড়াই দিব্যি থাকতে পারি।” ডাঃ হেমা সানের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী বা তাঁর সঙ্গী সব কিছুই হল তাঁর পোষ্য কুকুর, দুটি বিড়াল, একটি নেউল এবং অনেক অনেক পাখি। তাঁদের সঙ্গেই তাঁদের দিন গুজরান। হেমা বলেন, “এই প্রকৃতি ওদের সম্পত্তি, আমার নয়। আমি ওদের দেখাশোনা করার জন্য এখানেই আছি। মানুষ আমাকে বোকা বলে, আমি উন্মাদ হতেই পারি কিন্তু এটা আমার জীবনের ‘অদ্ভুত’ পথ। আমি এরকম জীবনই পছন্দ করি।”
সূত্রের খবর, হেমা সানে পুণে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন। এরপর বহু বছর পুণের একটি কলেজে অধ্যাপনা করেন তিনি। এর পাশাপাশি উদ্ভিদবিদ্যা ও পরিবেশ নিয়ে একাধিক বইও লিখেছেন তিনি। এখনও ফাঁকা সময় কাটে তাঁর লেখালেখিতেই। তবে বরাবরই বুধওয়ার পেথের একটি ছোট্ট কুঁড়ে ঘরে থাকেন তিনি। কিন্তু সেখানে বিদ্যুৎ নেই, কোনদিন ছিলও না।এ প্রসঙ্গে হেমা জানান, “আমি আমার গোটা জীবনে বিদ্যুতের প্রয়োজনই অনুভব করিনি। প্রায়ই এই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়, আমি কীভাবে বিদ্যুৎ ছাড়া বেঁচে আছি। আমি পালটা প্রশ্ন করি বিদ্যুৎ নিয়ে আপনারা কীভাবে থাকেন?”
[আরও পড়ুন: ছত্তিশগড়ের দান্তেওয়াড়ায় ফের সংঘর্ষ, খতম ২ মাওবাদী]
হেমার কথায়, “এই পাখিরাই আমার বন্ধু এবং যখনই আমি বাড়ির কাজ করি তখনই ওরা আসে। মানুষজন প্রায়ই আমাকে জিজ্ঞেস করে, ঘরটা বিক্রি করছি না কেন। কিন্তু ঘর বিক্রি করে দিলে এই গাছ, পাখির যত্ন নেবে কে? তাই আমি ওদেরই সাথেই থাকতে চাই!” আর যারা হেমা দেবীকে পাগল বলে, তাঁদের কী বলেন তিনি? প্রকৃতির এই মানুষ বলেন, “আমি কাউকে কোনও বার্তা বা জ্ঞান দিই না, বরং আমি বুদ্ধের বিখ্যাত কথাটাই উচ্চারণ করি। বুদ্ধ বলেছেন, নিজের জীবনের পথ নিজেকেই খুঁজে বের করতে হবে।”
The post প্রকৃতিকে ভালবেসে বিদ্যুৎ ছাড়াই জীবন কাটাচ্ছেন পুণের অধ্যাপিকা! appeared first on Sangbad Pratidin.