সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্য জ্বলছে। খোদ মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনও নিরাপদ নয়। এই পরিস্থিতিতে খানিক চমকপ্রদভাবে সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন 'আফস্পা' প্রত্যাহারের দাবি করল মণিপুরের বিজেপি সরকার। যা খানিকটা অবাক করেছে ওয়াকিবহাল মহলকে।
গত ১৪ নভেম্বর নতুন করে মণিপুরের ছ’টি থানায় আফস্পা কার্যকর করার বিজ্ঞপ্তি জারি করে কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পশ্চিম ইম্ফলের সেকমাই ও লামসাং, পূর্ব ইম্ফলের লামলাই, বিষ্ণুপুরের মইরাং, কাংপোকপির লেইমাখং এবং জিরিবাম থানা এলাকায় নতুন করে আফস্পা চালু করা হয়েছে। মণিপুর সরকারের স্বরাষ্ট্র দফতরের এক ডেপুটি সেক্রেটারি দিল্লিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি লিখে ওই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে অনুরোধ করেছেন।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ১৫ নভেম্বর রাজ্য মন্ত্রিসভায় নতুন করে আফস্পা জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা করেছে। রাজ্য মন্ত্রিসভা চায় আফস্পা পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হোক। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুক এবং প্রত্যাহার করুক। রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজেপি সরকারের এই সিদ্ধান্ত অবাক করার মতোই। যদিও এর নেপথ্যে যুক্তি আছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আফস্পা জারি থাকলে, সেনা সম্পূর্ণরূপে নিজেদের মতো কাজ করতে পারে। রাজ্য সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকে না সেনাবাহিনীর উপর। যা নিয়ে মণিপুরবাসীর মধ্যে অসন্তোষ দীর্ঘদিনের। বিরেন সিংয়ের সরকার মনে করছে, নতুন করে যে হিংসা ছড়িয়েছে, সেটার নেপথ্যে এই নতুন করে আফস্পা জারিও একটা কারণ হতে পারে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নতুন করে রাজ্যের ৬টি থানাকে আফস্পার অধীনে আনা হয়। কিন্তু শনিবার জিরিবাম থেকে অপহৃত ৬ মেইতেই নাগরিকের মৃত্যুর খবর আসার পর পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। শনিবার বিকালের পরই গোটা ইম্ফলে কারফিউ জারি করা হয়। সেনা, অসম রাইফেলস এবং মণিপুর পুলিশের নিরাপত্তারক্ষীরা কার্যত গোটা ইম্ফল শহর ছেয়ে ফেলেন। কিন্তু তারপরও থামানো যায়নি বিক্ষোভ। রাতে রাজ্যের দুই মন্ত্রী এবং তিন বিধায়কের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এমনকী, হামলা চালানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতেও।