সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা চলছে দেশের শীর্ষ আদালতে। তবে ঘটনার একমাসেরও বেশি সময় অতিক্রান্ত হয়েছে, আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি হয়নি মামলার। এই অভিযোগ করে এবার দেশের প্রধান বিচারপতির কাছে খোলা চিঠি পাঠালেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জগতের একাধিক মানবাধিকার সংগঠন। তাতে দাবি, দ্রুত এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট কার্যকরী পদক্ষেপ নিক। সময় নষ্ট হলে পরিস্থিতি আরও কঠিন হবে বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করা হয়েছে চিঠিতে। বিশেষত সমাজের নারীদের উপর সংঘটিত যৌন অপরাধের ক্ষেত্রে কঠোরতম সাজার বিষয়টি স্পষ্ট করা হোক।
আদিবাসী মহিলা সংগঠন, সাউথ এশিয়ান সলিডারিটি কালেক্টিভ, ল-ইয়ার্স কালেক্টিভ, সিপিএম-সহ প্রায় ৫৫ টি সংগঠন এবং সুশীল সমাজের হাজারের বেশি প্রতিনিধি রবিবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়কে যে খোলা চিঠি দিয়েছেন, তার মূল বিষয়বস্তু নারী সুরক্ষা হলেও আর জি করের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই তাঁদের যাবতীয় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে আবেদন, আর জি কর কাণ্ডের মূল অভিযুক্তকে দ্রুত দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। একইসঙ্গে ওই সরকারি হাসপাতালে যে আর্থিক দুর্নীতির হয়েছে, সেই চক্র ফাঁস করতে জরুরি পদক্ষেপের নির্দেশ দিক শীর্ষ আদালত।
চিঠির বয়ানে নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করেছেন প্রেরকরা। নারীবাদী সংগঠন, ছাত্র, গণসংগঠন এবং সাধারণ নাগরিক হিসেবে তাঁরা হতাশার কথা চেপে রাখেননি। তাঁদের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিতভাবে আর জি করের ঘটনায় মামলা গ্রহণ করে শুনানি শুরু করলেও এখনও পর্যন্ত তেমন অগ্রগতি চোখে পড়ছে না। মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ, ক্ষোভ, আবেগ রয়েছে এই ঘটনায়। তাঁরাও শীর্ষ আদালতের বিচারপ্রক্রিয়ার দিকে তাকিয়ে। এমন নৃশংস ঘটনার সুবিচার না পাওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদের আগুন নিভবে না বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন।
পাশাপাশি শুধু হাসপাতাল নয়, বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে মহিলা কর্মীদের সুরক্ষার বিষয় নিশ্চিত করার জন্য সুপ্রিম কোর্টকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। এ বিষয়ে শীর্ষ আদালত আগের শুনানিতে জাতীয় টাস্ক ফোর্স গঠন করার নির্দেশ দিয়েছিল। চিঠিতে সুশীল সমাজের আবেদন, ওই টাস্ক ফোর্সে নারী সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিদেরও আনতে হবে আলোচনার জন্য। সবমিলিয়ে আর জি কর কাণ্ডের শুনানির আগে দেশের প্রধান বিচারপতিকে লেখা এই চিঠি যে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ, তা বলাই বাহুল্য।