সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বুধেই চন্দ্রে পা রেখে ইতিহাস গড়েছে ভারত। কিন্তু এই চাঁদ জয়ের আনন্দ উচ্ছ্বাসেও রাজনীতির রং লাগানোর তোরজোড়! কিন্তু চাঁদকে মুঠোয় আনায় কৃতিত্ব কার? বুধ-সন্ধ্যায় এই প্রশ্নই যেন ছাপিয়ে গেল সব কিছুকে। বিরোধীদের অভিযোগ, ইসরোর মহাকাশবিজ্ঞানীদের সাফল্যের কৃতীত্ব ৫৬ ইঞ্চির বুকপকেটে ভরার চেষ্টা করছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদি (Narendra Modi)। এদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী, বিরোধীরা সকলেই একযোগে দিল্লির গেরুয়া মসনদকে মনে করিয়ে দিলেন ইসরোর চন্দ্রাভিযানের লড়াইয়ের ইতিহাসটা। দেশের বিজ্ঞান সাধকদের লড়াইকে। এবার চন্দ্রযান সাফল্য উত্তর সেই রাজনৈতিক তরজা নিয়েই তীব্র প্রতিবাদ করলেন ঋদ্ধি সেন।
অভিনেতার মন্তব্য,”না , চাঁদ আজকে আপনার হাতে না , আমার হাতে না , কোনো রাজনৈতিক দলের হাতে, এমনকী বিজ্ঞানীদের হাতেও না , চাঁদ মহাকাশের। তবে আজকের চন্দ্রপ্রভায় আলোকিত হবে বিজ্ঞানীদের চেষ্টা, দূরদর্শিতা এবং দক্ষতা। আর অমাবস্যার ভাগিদার হবে শুধুই রাজনৈতিক দলগুলি, ঠিক আগেরমতোই তারা থাকবে অন্ধকারেই। ভারতবর্ষ বা কোনো দেশ কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পত্তি নয়, তাই ভারতীয় নাগরিক হিসেবে গর্বিত হওয়ার সংজ্ঞাটার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক আবেগ জুড়বেন না।”
সেই ফেসবুক পোস্টেই ঋদ্ধির সংযোজন, “বিজ্ঞান কোনও রাজনৈতিক আদর্শ মেনে অগ্রগামী হয় না। চাঁদও চেনে না লাল, সবুজ, গেরুয়া পতাকার রং। তাই গর্বিত বোধ করি আমাদের দেশের কিছু মুক্ত চিন্তার মানুষদের জন্য। যারা মহাকাশের সব রং সমানভাবে দেখেন।”
[আরও পড়ুন: ‘চাঁদে চাওয়ালা’ কার্টুন বিতর্ক অতীত! চন্দ্রযান সাফল্যে করজোড়ে ইসরোকে কুর্নিশ প্রকাশ রাজের]
যদিও এমন পোস্ট করে পালটা কটু কথাও শুনতে হয়েছে ঋদ্ধি সেনকে। কেউ কেউ আবার তাঁকে মনে করিয়ে দিলেন, ‘আজ রাশিয়ার চন্দ্র মিশন সাফল্যের মুখ দেখলে তখন আপনারাই পুতিনকে বাহবা দিতেন। তাহলে মোদিকে নিয়ে কেন এত মাথাব্যাথা?’
চন্দ্রযানের চাঁদে অবতরণকে মোদি সরকার তাদের কৃতিত্ব বলে দাবি করতে শুরু করবে, এই আশঙ্কা বিরোধীদের ছিলই। বিকেলেই মমতা বলেন, কৃতিত্ব আর কারও নয়, তা শুধু বিজ্ঞানীদের। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অভিনন্দন জানিয়েছেন ইসরোকে। কংগ্রেস (Congress) স্মরণ করাতে চেয়েছে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে। রাহুলদের কথায়, নেহরু মহাকাশ গবেষণার যে বৃহত্তর স্বপ্ন দেখেছিলেন, চন্দ্রযানের চাঁদে অবতরণের মধ্য দিয়ে তা একটা মাইলফলক ছুঁল। আগামী দিনে ভারতের মহাকাশ গবেষণা নতুন উচ্চতা নেবে। এবার রাজনৈতিক দলগুলির কাজিয়া নিয়ে বিরক্ত হয়ে মুখ খুললেন ঋদ্ধি সেন।