সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফেডারেশন-পরিচালক দ্বন্দ্ব, বকেয়া পারিশ্রমিক, কলাকুশলীদের অতিরিক্ত সময় কাজ করানো কিংবা ফেডারেশনের নিয়মের বেড়াজালে বাইরের কাজ আটকে যাওয়ার মতো একাধিক সমস্যা মাথা চাড়া দিয়েছে টালিগঞ্জের সিনেপাড়ায়। এই সমস্যা অবশ্য নতুন নয়! বহুদিনের। মাসখানেক আগেই পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়কে ফেডারেশনের বয়কট নিয়ে ডিরেক্টর্স গিল্ডের সঙ্গে দ্বন্দ্ব বাঁধে। সেইসময়ে মধ্যস্থতা করতে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে বৈঠকের পর নবান্নে পৌঁছে দেব, তিনি এবং গৌতম ঘোষরা। শেষমেশ সেই সমস্যার সুরাহা হলেও টলিউডে কিন্তু এখনও বেশকিছু দ্বন্দ্ব ছাইচাপা আগুনের মতো রয়ে গিয়েছে। সেই প্রসঙ্গেই বৃহস্পতিবার 'কফি উইথ কুণাল'-এ দেবকে(Dev) প্রশ্ন ছোঁড়েন কুণাল ঘোষ।
কুণালের প্রশ্ন ছিল, "টলিউডে দ্বন্দ্ব লেগেই রয়েছে। পরিচালক বনাম টেকনিশিয়ান হোক বা অভিনেতারা... সব দিকে দ্বন্দ্ব। দেব-প্রসেনজিৎরা যার জন্য নবান্নেও গিয়েছিলেন। কবে এই সমস্যার সুরাহা হবে?" সেই প্রেক্ষিতেই টালিগঞ্জ সিনেপাড়া নিয়ে ইতিবাচক মনোভাবের পরিচয় দিলেন দেব। সুপারস্টার সাংসদ তথা প্রযোজকের মন্তব্য, "এটা একটা লক্ষণ যে, ইন্ডাস্ট্রি বড় হচ্ছে। পজিটিভ দিক থেকে দেখলে। সবাই তাদের নিজস্ব অবদান রাখতে চান। সব ইন্ডাস্ট্রিতে রাজনীতি হয়। এটা আদতে ইকোসিস্টেমের লড়াই। আমাদের ইন্ডাস্ট্রির ইস্যুগুলো অনেক লঘু। এখানে আসলে ইগোর লড়াই। বুম্বাদা আর আমার সবসময়ে প্রচেষ্টা থাকে যাতে সবাই যেন একজোটভাবে থাকতে পারে। আমার একটাই বক্তব্য, কারও পেটে লাথি মেরো না। আমি তো নয় প্রযোজক হিসেবে বলছি। কলাকুশলীদের অবস্থা আরও খারাপ। কিছু নিয়ম সকলকে মানতে হবে। আসলে পারস্পারিক সম্মানটা দরকার। সকলকে মনে রাখতে হবে, আমরা এই বাংলা ইন্ডাস্ট্রির সদস্য। সেটা ঠিক রাখার কর্তব্য সকলের।"
একাধিক সিনেমা রিলিজের সময়ে প্রেক্ষাগৃহে টাইমিং নিয়েও সমস্যা হয়। সেখানেও কখনও সিনে নির্মাতা এবং ডিস্ট্রিবিউটরদের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। অনেক সিঙ্গল স্ক্রিন বন্ধ হয়েছে। কিছু ধুঁকছে। যে পরিস্থিতি সেটা বাংলার সিনেব্যাবসার জন্য কতটা ভালো? প্রশ্ন রেখেছিলেন কুণাল ঘোষ। এপ্রসঙ্গে অভিনেতা তথা প্রযোজক দেব বলছেন, "সময় পালটেছে। তার সঙ্গে সবাইকে পালটাতে হবে। গড়িয়াহাটে যেমন ভিড় হত, সাউথ সিটিতে তেমন ভিড় হয় এখন। অনেক সিঙ্গলস্ক্রিন ভেঙে মাল্টিপ্লেক্স করা হয়েছে। অনেকে করতেও পারেনি অর্থাভাবে। সিঙ্গলস্ক্রিনের মালিকানা ভাগ হয়ে গিয়েছে। বর্তমান প্রজন্মের এই ভাগাভাগির জেরেই হয়তো অনেকক্ষেত্রে দুর্ভোগ ঘটে! আজকে সিনেমা দেখা পিকনিকের মতো। সকলে ছবি দেখে বাইরে খাওয়া-দাওয়া করে বাড়িতে ফেরে। অর্থাৎ একটা সিনেমা চললে তার পাশাপাশি আরও অনেকের লক্ষ্মীলাভ হয়। আমার মতে শপিং মল হোক, কিন্তু সেখানে সিনেমার স্ক্রিনও থাকুক। সিনেমার ব্যবসা এখন একটা প্যাশন মাত্র।"