সন্দীপ্তা ভঞ্জ: ওঁরা কেউ কথা বলতে পারেনা, এমনকী শুনতেও পারে না। বাইরের জগতের সঙ্গে ওদের কথোপকথন হয় ভাবভঙ্গিতে। মনের ভাব বোঝাতে কিংবা কথা বলতে ইশারাই সই তাঁদের। আজকের ব্যস্তজীবনে অনেকের সঙ্গেই তো আমাদের কথা বলা হয়ে ওঠে না। আমরা বলি না সময়ের অভাবে। কিন্তু ওরা? কত কথাই হয়তো পেট পাকিয়ে আসে ওঁদের। কিন্তু মুখ ফুটে বলা হয়ে ওঠে না। সেই না বলা কথার শরিক হয়ে, ওদেরই জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন মীর। তাঁর কর্মজীবনের রজত জয়ন্তী বর্ষ উদযাপন অনু্ষ্ঠান এভাবেই হয়ে উঠেছে ওঁদের প্রতি একটা শ্রদ্ধার্ঘ্য।
[আরও পড়ুন: সেন্সর বোর্ডের সবুজ সংকেত, ‘গুমনামি’ বিরোধীদের কিস্তিমাত সৃজিতের]
আমাদের চারপাশে এমন কত বিষয় থাকে যা নিয়ে দিব্যি আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা শুনে কাটিয়ে দিতে পারি। কিন্তু ওই যে শুনতে না পারাটাই প্রতিবন্ধকতা। সৃষ্টিতেই যে প্রতিবন্ধকতা। এঁদেরও বন্ধু হয়েছেন মীর।
রাগ হয়েছে? গাল ফুলেছে? কিংবা হাজারও সমস্যা? কখনও-সখনও উপায় থাকে একটাই- ‘কণ্ঠ ছাড়ো জোরে’। ভিতর থেকে কথা যেন ঠিকরে বাইরে বেরিয়ে আসতে চায়। কিন্তু ওরা যাঁরা ছাড়তে পারেন না! কিংবা মন খারাপ হলে গান শুনে মন ঠিক করার উপায়ও নেই যাঁদের কাছে। তাঁরা কী করেন? ওই যে ইশারা-ইঙ্গিত। আমাদের জীবনে কত-শত সমস্যা নিয়ে আমরা রোজ কারও না কারও সঙ্গে আলোচনা করি। ওরাও করেন। কিন্তু একটু অন্যভাবে। নিঃশব্দ ভাষায়। আমরা হয়তো পজিটিভিটি বজায় রাখতে বলি ‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন’ ব্যক্তি কিংবা মানুষ। রোজকার জীবনে চলতেও যে তাঁদের অসুবিধে হয়, সেটা বোধহয় আলাদা করে আর বলার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু সমস্ত প্রতিকূলতা কিংবা সৃষ্টির প্রতিবন্ধকতাকে পার করেই তাঁরা এগিয়ে যান নিজ পথে। নিজ লক্ষ্যে। নিজ গন্তব্যে। কারণ ওরা পিছিয়ে পড়তে নারাজ। সেই মানুষগুলিরও দরকার একটু যত্নের, প্রয়োজন ভালবাসার। ওরা তো চলছেই নিজের মতো করে, শুধু আপনার সাহায্যের হাতটুকু বাড়িয়ে দিয়ে সেই পাওয়া-না পাওয়ার শূন্যস্থানটুকু পূরণ করুন। ঠিক সেটাই করেছেন মীর।
[আরও পড়ুন:বাংলার প্রথম জম্বি ছবির জন্য জুটি বাঁধলেন রুদ্রনীল-তনুশ্রী]
‘হ্যান্ডিক্যাপড ডেভেলপমেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। ওদের জন্য, যাঁরা মীরকে কোনও দিন শোনেননি। শুনতে পারেননি। আবেগ মাখা গলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে পারেননি। সদ্য কর্মজীবনে ২৫ টি বসন্ত পার করেছেন মীর। এককথায় এবছর তাঁর কর্মজীবনের রজত জয়ন্তী বর্ষ। সেই উপলক্ষেই সঞ্চালক তথা অভিনেতা মীর আফসার আলি তাঁর ব্যান্ড ‘ব্যান্ডেজ’-এর সঙ্গে আয়োজন করেছেন ‘মীর টোয়েন্টি ফাইভ ইয়ারস’ নামক এক অনুষ্ঠানের। যা ৩১ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে কলা মন্দিরে। আর সেই অনুষ্ঠানের একটা লভ্যাংশ মীর তুলে দেবেন সেই সংস্থার হাতে। কারণ? মীরের কথায়, “আমি তাঁদের পাশে দাঁড়াতে চাই, যাঁরা মীর কে কোনও দিন বলতে শোনেননি।” আপনার বিনোদনের কারণ কারও সাহায্য হয়ে দাঁড়াতে পারে।
The post মানবিক মীর, এগিয়ে এলেন ওঁদের জন্য যাঁরা কোনও দিন শিল্পীকে শোনেননি appeared first on Sangbad Pratidin.