সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শহরে ফের রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ডের ছায়া। আনন্দপুরে সরকারি আবাসন থেকে উদ্ধার মহিলার পচাগলা দেহ। পুলিশের অনুমান, অপুষ্টিজনিত কারণেই মৃত্যু হয়েছে ওই মহিলার। স্থানীয়দের দাবি, মৃতার সঙ্গে থাকতেন তাঁর এক বোন। দিদির মৃত্যুর পর দেহ আগলে বসেছিলেন তিনি। বছর দুয়েক আগে একইভাবে উদ্ধার হয়েছিল আরেক বোনের দেহও। ঘটনায় এলাকায় তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
[দিদির মৃতদেহ আগলে ৩ বোন, রবিনস্ট্রিট কাণ্ডের ছায়া বাঁকুড়ায়]
মৃতের নাম পুতুল বসাক। পুতুলদেবীরা তিন বোন। কেউ-ই বিয়ে করেননি। বাবার মৃত্যু পর আনন্দপুরের ওই সরকারি আবাসনের একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন অবিবাহিত তিন বোন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মৃতার বাবা সরকারি চাকরি করতেন। তিন মেয়েকে নিয়ে ওই আবাসনে থাকতেন তিনি। তাঁর স্ত্রী বহু বছর আগেই প্রয়াত হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা ওই মহিলাকে দেখেননি। কয়েক বছর আগে মারা যান পুতুল বসাকের বাবা। বছর দুয়েক আগে ওই আবাসনেই মারা যান পুতুলদেবীর আর এক বোন। কয়েক দিন পর তাঁর দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। পুতুলদেবী প্রকৃতিস্থ ছিলেন না। তাঁর বোনও মানসিক ভারসাম্যহীন। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ ছিল না তাঁদের। দিনরাত ফ্ল্যাটের দরজা-জানলা বন্ধ খাকত। অত্যন্ত পূতিগন্ধময় ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকতেন দুই বোন। এলাকার কেউ খাবার দিলে খেতেন। নাহলে খাওয়াও জুটত না।
[শহরে নিষিদ্ধ মাদক ম্যাজিক মাশরুমের হদিশ, গ্রেপ্তার ৩]
রবিবার সকালে ফ্ল্যাটের সামনে খাবার রেখে এসেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু, সেই খাবার নিতে কেউ আসেনি। তাতেই ওই আবাসনের বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। ফ্ল্যাটে ঢুকে তাঁরা দেখেন, পুতুল বসাকের পচাগলা দেহ পড়ে রয়েছে। খবর দেওয়া হয় থানায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সম্ভবত অপুষ্টিজনিত কারণে মারা গিয়েছেন পুতুল বসাক। ঘটনায় এলাকায় তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বছর দুয়েক আগে যখন ওই আবাসনে পুতুলদেবীর আর এক বোন মারা গিয়েছিলেন, তখনও তাঁরা কিছু টের পাননি। বাকি দুই বোনও দিদির দেহ সৎকারের কোনও ব্যবস্থা করেননি। পরে ফ্ল্যাট থেকে দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। অভিযোগ, ওই ঘটনার পরও পুতুলদেবী ও তাঁর বোনের পুর্নবাসন বা চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা করেনি। স্থানীয় বাসিন্দারাই তাঁদের খাবার দিতেন। প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ৩ জুন রবিনসন স্ট্রিটে অপরিচ্ছন্ন ফ্ল্যাটের দিদি দেবযানীর কঙ্কাল আগলে বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল পার্থ দে-কে। ঘটনার শোরগোল পড়েছিল রাজ্যে। পরে অন্য একটি আবাসনে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় পার্থ দে-রও।
[নয়া রূপে সাজছে ‘হেরিটেজ’ হাওড়া স্টেশন, দেখুন ভিডিও]
The post দিদির মৃতদেহ আগলে বসেছিলেন বোন, পচাগলা দেহ উদ্ধার করল পুলিশ appeared first on Sangbad Pratidin.