সুকুমার সরকার, ঢাকা: কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ফের সন্ত্রাসবাদী হামলা। এবার জঙ্গিদের হাতে প্রাণ হারালেন আজিমুদ্দিন নামের আরও এক রোহিঙ্গা নেতা। বৃহস্পতিবার তাঁকে কুপিয়ে খুন করে সন্ত্রাসবাদীরা। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ১৮ নম্বর ময়নারঘোনা ক্যাম্পের বি-ব্লকের সাব-ব্লকে।
জানা গিয়েছে, নিহত আজিমুদ্দিন ময়নারঘোনা রোহিঙ্গা (Rohingya) ক্যাম্পের এল-১৬ ব্লকের বাসিন্দা কমলউদ্দিনের ছেলে ও বি ব্লকের রোহিঙ্গা নেতা ছিলেন। ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহম্মদ কামরান হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে হামলাকারীদের কোনও পরিচয় এখনও জানা যায়নি। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বৃহস্পতিবার রাতে ময়নারঘোনা আশ্রয়শিবিরের বি-ব্লকের সাব-ব্লক এম-৯-এ মাঝিরা স্বেচ্ছাসেবকদের রাত্রিকালীন পাহারার দায়িত্ব বণ্টন করছিলেন। এ সময় ১৫-২০ জনের একদল সন্ত্রাসবাদী অতর্কিতে দেশীয় ধারাল অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। সৈয়দ করিম, রহিমুল্লাহ ও আজিমুদ্দিনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে ফেলে রাখে তারা। পরে স্থানীয় লোকজন আহত তিনজনকে উদ্ধার করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এমএসএফ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক আজিমুদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত দুজনকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: করোনা কাল অতীত, ভারত-বাংলাদেশ যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের পর এবার চালু বাস পরিষেবা]
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারি মাসে আবুল কালাম নামের এক রোহিঙ্গা নেতাকে হত্যা করে জঙ্গিরা। গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর উখিয়ার লম্বাশিয়া শিবিরে রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহত মুহিবুল্লাহ প্রত্যাবাসনের পক্ষে সোচ্চার ছিলেন বলে পরিবার ও পুলিশ জানিয়েছিল। এরপর একই বছরের ২২ অক্টোবর ভোরে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের ১৮ নম্বর ময়নারঘোনা রোহিঙ্গা শিবিরের একটি মাদ্রাসায় একদল সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এতে মাদ্রাসাটির ছাত্র-শিক্ষকসহ ছয় রোহিঙ্গা নিহত শরণার্থীর মৃত্যু হয়।
প্রসঙ্গত, মায়ানমারে রোহিঙ্গা জঙ্গিদের মদত দিচ্ছে পাকিস্তানের কুখ্যাত গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। মায়ানমারের জঙ্গি সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি তথা আরসা-কে মদত দিচ্ছে তারা। আর সেই প্রভাব এসে পড়ছে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরগুলিতে। বিগতদিনে শরণার্থীদের মধ্যে জঙ্গিদের তৎপরতা বেড়েছে বলেও একাধিক রিপোর্টে জানিয়েছে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা সংস্থাগুলি। এহেন পরিস্থিতিতে শরণার্থী শিবিরে ফের রোহিঙ্গা নেতা খুন হওয়ায় রীতিমতো উদ্বিগ্ন দেশের প্রশাসন ও নিরাপত্তামহল।