সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রোহিঙ্গা শিবিরে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে উদ্বিগ্ন প্রশাসন। বিগত দিনে একের পর এক রোহিঙ্গা নেতা খুনের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে অভিযান শুরু করেছিল পুলিশ। কিন্তু তাতেও বিশেষ ফল মিলছে না। এবার গুলি করে আরও এক রোহিঙ্গা নেতাকে হত্যা করল জঙ্গিরা।
এবার কক্সবাজার জেলার উখিয়ায় ক্যাম্পে এক রোহিঙ্গা নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার সকাল ১০.৩০ নাগাদ বালুখালি ক্যাম্প-৮ ইস্টে এই কাণ্ড ঘটে। ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মহম্মদ ফারুক আহমেদ জানান, নিহত রোহিঙ্গা হেড মাঝি শফিউল্লাহ ওরফে শফিক (৩৮) ওই ক্যাম্পের বি-ব্লকের মহম্মদ সিদ্দিকের ছেলে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বিগতদিনে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। এই হামলা আরও বাড়বে। কারণ, তাঁরা রোহিঙ্গা শরণাথীদের দেশে ফিরিয়ে নিতে কাজ করছেন। কিন্তু কিছু রোহিঙ্গা দুষ্কৃতী দেশে ফিরতে নারাজ। কারণ, তারা বাংলাদেশে বসে অবাধে অপকর্ম চালাতে স্বচ্ছন্দ্য বোধ করে। মায়ানমারে সেনাশাসনে তা সম্ভব নয়।
[আরও পড়ুন: মাঝ সমুদ্রে এক মাস! অবশেষে ইন্দোনেশিয়া পৌঁছল ৫৭ রোহিঙ্গা শরণার্থী]
উল্লেখ্য, ক্রমে সন্ত্রাসবাদীদের চারণভূমি হয়ে উঠছে বাংলাদেশেরে (Bangladesh) রোহিঙ্গা শিবিরগুলি। পুলিশ ও প্রশাসনের হাজার চেষ্টা সত্ত্বেও সেখানে কিছুতেই থামছে না খুনোখুনির ঘটনা। মাস দুয়েত আগে এক রোহিঙ্গাকে ইসলামিক স্টেটের কায়দায় গলা কেটে খুন করে জঙ্গিরা। তার আগে বালুখালি ক্যাম্পে দুই রোহিঙ্গা নেতাকে খুন করেছিল জঙ্গিরা। পরপর এহেন ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে শরণার্থী ক্যাম্পে। রোহিঙ্গা নেতারা এসব ঘটনার জন্য জঙ্গি সংগঠন ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’ বা আরসাকে দায়ী করছেন। তাঁদের অভিযোগ, নিরাপত্তহীনতার কারণে রোহিঙ্গা নেতাদের অনেকে এখন শিবিরের বাইরে বসবাস করছেন।
সূত্রের খবর, রোহিঙ্গা (Rohingya) শরণার্থী শিবিরের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায় রোহিঙ্গা জঙ্গিগোষ্ঠী আরসা। কক্সবাজারে টেকনাফ এবং উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরগুলো পরিচালনায় সহায়তার জন্য প্রতিটি শিবিরে কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা নির্বাচন করা হয়। যাদের মাঝি বলা হয়। মূলত, এদেরই নিশানা করে জঙ্গিরা। রোহিঙ্গা নেতাদের হিসাবে, গত এক বছরে কমপক্ষে ১২টি হত্যাকাণ্ড। পুলিশি অভিযান চালিয়েও তেমন কোনও সুরাহা মিলছে না। এ নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন প্রশাসন। প্রায় প্রতিদিনই খুনোখুনি, লুটপাটের ঘটনা ঘটে চলেছে।