সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঘন ঘন বাজছে এয়ার রেড সাইরেন। মিসাইলের অভিঘাতে ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে বহুতল। পথেঘাটে ছিন্নবিচ্ছিন্ন শরীরের স্তূপ। রক্তের ছোঁয়া রাজপথে। যুদ্ধের ২৩তম দিনে এই হল ইউক্রেনের ছবি। আন্তর্জাতিক মঞ্চের কড়া অবস্থান ও নিষেধাজ্ঞার চোখরাঙানি উপেক্ষা করে লড়াই থামাতে মোটেই প্রস্তুত নন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যুদ্ধ যে আপাতত থামছে না, সে কথা স্পষ্ট করে এবার দোনবাসে ‘নো ফ্লাই জোন’ ঘোষণা করল রাশিয়া।
[আরও পড়ুন: যুদ্ধ আরও দীর্ঘস্থায়ী হলে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে রাশিয়া, সতর্ক করল আমেরিকা]
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে খবর, রুশপন্থী বিদ্রোহীদের দখলে থাকা দোনবাসের স্বঘোষিত রাষ্ট্র ‘ডোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক’-সহ গোটা অঞ্চলের আকাশে শুক্রবার থেকে বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মস্কো। এই ‘নো ফ্লাই জোন’ ঘোষণা হওয়ার অর্থ হচ্ছে, রুশ ফৌজের অনুমতি ছাড়া অন্য কোনও বিমান নির্দিষ্ট আকাশসীমায় প্রবেশ করলে সেটিকে গুলি করে নামানো হতে পারে। বলে রাখা ভাল, যুদ্ধের গতিপথ যত পালটেছে ততই রণনীতিতে পরিবর্তন এনেছে রাশিয়া (Russia)। সরাসরি নগরযুদ্ধে না জড়িয়ে ইউক্রেনের সামরিক ঘাঁটিগুলিতে লাগাতার মিসাইল হামলা চালাচ্ছে রুশ ফৌজ। জনমানসে আতঙ্ক তৈরি করতে হাসপাতাল, স্কুল, থিয়েটার-সহ বম্ব শেল্টারগুলিতে গোলাবর্ষণ করছে পুতিনের বাহিনী বলে অভিযোগ।
এদিকে, শুক্রবার পশ্চিম ইউক্রেনের লিভিভ এয়ারপোর্টের কাছে মিসাইল হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। চেরনিহিভের মেয়র জানিয়েছেন, গত চব্বিশ ঘণ্টায় রাশিয়ার সেনাবাহিনীর হামলায় ৫৩ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার মারিওপোলের থিয়েটারে বোমা হামলার পর এখনও উদ্ধারকাজ চলছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে এখনও বেশ কয়েকজন আটকে রয়েছেন বলে খবর।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেও ন্যাটো জোটের কাছে ইউক্রেনের আকাশকে ‘নো ফ্লাই জোন’ ঘোষণা করার আবেদন জানিয়েছিলেন জেলেনস্কি (Volodymyr Zelenskyy)। তবে সেই আবেদন খারিজ করে দেয় ন্যাটো। এহেন সিদ্ধান্তের পক্ষে ন্যাটো জোটের যুক্তি, ইউক্রেনের আকাশে ‘নো ফ্লাই জোন’ ঘোষণা করলে রাশিয়ার সঙ্গে পরমাণু যুদ্ধের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। তারপরই সেবার ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন জেলনস্কি। তিনি সাফ বলেছিলেন, ”আজ থেকে সব মৃত্যুর দায় ন্যাটোর।” বলে রাখা ভাল, ইউক্রেনের আকাশে ‘নো ফ্লাই জোন’ তৈরি করতে হলে ন্যাটোকে যুদ্ধবিমান পাঠাতে হবে। শুধু তাই নয়, প্রয়োজনে হানাদার রুশ ফাইটার জেটগুলিকে গুলি করে নামাতে হবে। আর তেমনটা হলে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে ন্যাটো।