সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকা, ইতালি, ফ্রান্স, জাপান, বাংলাদেশ – সব দেশের স্টল সেজে উঠেছে। কিন্তু কলকাতা বইমেলায় একমাত্র ব্যতিক্রমী রাশিয়া (Russia)। যুদ্ধের পটভূমিতে বিশ্বের বৃহত্তম দেশটিকে নিয়ে এখন গোটা বিশ্বে শেষ নেই কৌতূহলের। বাদ নেই কলকাতা বইমেলাও (Kolkata Book Fair) । সোমবার, উদ্বোধনের দিন সবাই খুঁজেছিলেন, রাশিয়ার স্টলটা কোথায়? কিন্তু মাঝরাতেও পুরোপুরি ফাঁকা ছিল রাশিয়ার স্টল। ইউক্রেনের (Ukraine) সঙ্গে যুদ্ধের কারণে মস্কো থেকে যে কবি-সাহিত্যিকদের আসার কথা ছিল, তাঁরা আসছেন না। তাহলে কি এবার কলকাতা বইমেলায় এমন ছন্নছাড়াই থাকবে ভ্লাদিমির পুতিনের দেশের স্টল? উত্তর মিলল মঙ্গলবারই। ফাঁকা থেকে ভরে উঠেছে রুশ স্টল। তাকগুলো বইয়ে সাজানো। রাশিয়ান কর্তাদের আশ্বাস পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়ে উঠল।
মঙ্গলবার দুপুর বারোটা নাগাদ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হল রাশিয়ার স্টলটির। তার আগে সোমবারের প্রস্তুতি ছিল চোখে পড়ার মতো। নিজের হাতে গাড়ি থেকে একের পর এক বইয়ের পেটি নামিয়ে স্টলে রাখছিলেন রাশিয়ার ডেপুটি কনসাল জেনারেল মিখাইল গুশ্চেভ। মিখাইলের সামনে সময়ের ডেডলাইন অক্ষুণ্ণ রাখাটাই একরকমের যুদ্ধ। কারণ, রাশিয়ার এফ-১৪ স্টলের চারপাশে ন্যাটো জোটের ব্রিটেন, আমেরিকা, স্পেন, ইটালি-সহ সব স্টল সেজেগুজে তৈরি।
ইউক্রেনে রুশ হামলার পর বইপ্রেমীদের তীব্র আগ্রহ রাশিয়ার স্টল নিয়ে। অনেকেই মঙ্গলবার খুঁজে খুঁজে চলে গিয়েছেন রাশিয়ার স্টলে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বইমেলার উদ্বোধনী মঞ্চে বলেছিলেন, “যুদ্ধ শুরু হয়েছে। তবে আমরা নির্দিষ্ট কোনও দেশের পক্ষে নই। আমরা বিশ্বশান্তির পক্ষে। বইমেলায় নানা রকম স্টল হয়েছে। কেউ যেন কোনও বিক্ষোভ না দেখান।” কনসান জেনারেল মিখাইলের দাবি, “এবার কলকাতা বইমেলায় এক অন্য রাশিয়ার ছবি আপনারা দেখবেন। সাহিত্য, কবিতা, গান এবং ছবির মাধ্যমে রাশিয়াকে এক ভিন্ন মাত্রায় আমরা কলকাতা বইমেলায় উপস্থাপিত করব। একটি চিত্র প্রদর্শনীও করব আমরা।”
[আরও পড়ুন: রুশ ক্ষেপণাস্ত্রে গুড়িয়ে গেল ইউক্রেনের প্রশাসনিক ভবন, ভিডিও দেখে শিউরে উঠছে দুনিয়া]
যুদ্ধ শুরুর আগে মস্কো থেকে ভারতে পা রেখেছেন রুশ চিত্রশিল্পী কনস্ট্যানটাইন পলিকভ। রাশিয়ান সংসদে এপ্রিলে তাঁর ছবির প্রদর্শনী হওয়ার কথা। বললেন, “জানি না সংসদে অংশ নিতে পারব কি না। তবে এক হাজার রুশ বই থাকবে কলকাতার স্টলে। ইংরেজি ও রাশিয়ান দুই ভাষায়।” কলকাতায় ‘রাশিয়ান সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড কালচার’-এর সহ-অধিকর্তা ইরিনা মালিশেভাও তুমুল ব্যস্ত। কাজের ফাঁকে জানালেন, “দু’জন রুশ সাহিত্যিক প্রায় ১২ ঘণ্টার উড়ান সফর করে কলকাতায় পৌঁছেছেন। আরও কেউ কেউ থাকবেন।” ব্রিটেনের বইয়ের স্টলে বসে ব্রিটিশ কাউন্সিল লাইব্রেরির কর্মী প্রবিনা ফেনে বলেন, “বইমেলায় মনে হয় না যুদ্ধ-বিগ্রহের ভূমিকা থাকবে।”