সুকুমার সরকার, ঢাকা: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের (Russia-Ukraine Conflict) আবহে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য পোল্যান্ড সীমান্ত (Poland border) উন্মুক্ত করে দেওয়া হল। তাঁদের জন্য ভিসাও দরকার নেই। এক্ষেত্রে শুধু বৈধ পাসপোর্ট থাকলেই সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে তা দেখিয়েই পোল্যান্ডে ঢুকতে পারা যাবে। তবে যাঁদের পাসপোর্ট নেই, তাঁরা ‘ট্র্যাভেল পাস’ নিয়ে পোল্যান্ডে ঢুকতে পারবেন।
শুক্রবার পোল্যান্ডের ওয়ারশ থেকে বাংলাদেশ দূতাবাস এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে। রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযান শুরু করার পর প্রায় ২৫০ জন বাংলাদেশি (Bangladeshi) ইউক্রেন ছেড়ে প্রতিবেশী পোল্যান্ডে যেতে চাইছেন। বিদেশ প্রতিমন্ত্রী মহম্মদ শাহিরয়ার আলম বৃহস্পতিবার বিকেলে বিদেশ মন্ত্রকে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, ”ইউক্রেন ছাড়তে আগ্রহী বাংলাদেশিরা যাতে পোল্যান্ডে ঢুকতে পারে, সে ব্যাপারে সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। কনস্যুলার সেবা দিতে ইতালি ও জার্মানির বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পোল্যান্ডের ওয়ারশে বাংলাদেশ দূতাবাসে কর্মকর্তা পাঠানো হচ্ছে। ইউক্রেন থেকে বাংলাদেশিরা পোল্যান্ডে যাওয়ার পর তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করবে সরকার।”
[আরও পড়ুন: পুরভোট হবে রাজ্য পুলিশেই! কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে বিজেপির করা মামলা খারিজ সুপ্রিম কোর্টে]
এদিকে ইউক্রেনে যুদ্ধের ঘনঘটা বাড়তে থাকায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ (Bangladesh)। ঢাকায় বিদেশ মন্ত্রক বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘এই ধরনের পরিস্থিতি পুরো অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতায় মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। তাই আমরা সব পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম বজায় রেখে, বৈরিতার অবসান ঘটিয়ে এবং কূটনীতি ও আলোচনায় ফিরে আসার মাধ্যমে এই সংকট সমাধানের চেষ্টা করার আহ্বান জানাই।” বিদেশ মন্ত্রক বলেছে, ‘‘এরই মধ্যে আমরা ইউক্রেনে থাকা বাংলাদেশিদের নিরাপদ স্থানে এবং প্রয়োজনে পোল্যান্ডে যেতে বলেছি। বিদেশ মন্ত্রক পোল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে নিবিড় সমন্বয় বজায় রেখেছে। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার সুষ্ঠু সমন্বয়ের জন্য এরই মধ্যে ওয়ারশে বাংলাদেশ দূতাবাসকে অতিরিক্ত জনবল ও সম্পদ দিয়ে শক্তিশালী করা হয়েছে। সব ধরনের কনস্যুলার সহায়তা বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে।’’
[আরও পড়ুন: ‘পুতিন হিটলার, ওকে গ্রেপ্তার করো’, যুদ্ধের বিরুদ্ধে রাশিয়ার রাজপথেই বিক্ষোভ হাজার হাজার মানুষের]
ঢাকা (Dhaka) এই অঞ্চলে এবং এর বাইরে অর্থনীতি ও অন্যান্য ক্ষেত্রে ইউক্রেন সংকটের সম্ভাব্য প্রভাবগুলো তারা পর্যবেক্ষণ করছে। এর আগে বিদেশ প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘ইউক্রেনে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের নিয়ে আমাদের দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ করে তাদের মতামত নিচ্ছেন। আমাদের সর্বশেষ হিসাবে প্রায় আড়াইশো বাংলাদেশি সেই গ্রুপের সদস্য হয়েছে। তারা বিভিন্নভাবে জানিয়েছে, এর বাইরেও অনেক বাংলাদেশি রয়েছে। আমরা মনে করছি, সংখ্যাটি পাঁচশোর মতো হতে পারে।’’ প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, ‘‘বাংলাদেশিদের বিষয়টি আমরা পোল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছিলাম। তারা বলেছে, সত্যিকারের অর্থে যদি প্রয়োজন হয় তাহলে তারা জরুরি ভিত্তিতে ভিসার ব্যবস্থা করবে। তবে সেটি বাস্তবায়ন শুরু হয়নি।’’ যে বাংলাদেশিরা ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ডে আসতে চান, তাদের যেন ‘অন অ্যারাইভাল ভিসা’ (আগমনী ভিসা) দেওয়া হয়, এই আবেদনও জানানো হয়েছে।