সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়ার বিমান দুর্ঘটনার নেপথ্যে বজ্রপাতকে দায়ী করলেন চালক৷ তাঁর দাবি, বিমান ওড়ার পর আচমকাই বাজ পড়ে৷ আর তাতেই আগুন লেগে গিয়েছিল বিমানটিতে৷ তাই জরুরি অবতরণ করতে হয় মস্কোর বিমানবন্দরে৷ তবে শেষরক্ষা হয়নি৷ মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৪১ জন যাত্রীর৷ বেঁচে যাওয়া বিমান চালক সাময়িক ট্রমা কাটিয়ে ওঠার পরই এই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন৷
রবিবার সন্ধে৷ মস্কোর শেরেমেতেইভ বিমানবন্দর থেকে ৭৩ জন যাত্রী নিয়ে সবে উড়েছিল সুখোই সুপারজেট ১০০ বিমানটি৷ গন্তব্য ছিল মারমানস্ক শহর৷ কিন্তু ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই এটিসির সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়৷ একমাত্র ‘এমারজেন্সি’ বোতাম ছাড়া কিছুই কাজ করছিল না৷ ফলে বিমানটিকে জরুরি অবতরণ করাতে হয়৷ সেসময় বিমানে দাউ দাউ করে জ্বলছিল আগুন৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত বিভিন্ন ছবি, ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে, পিছনের অংশে আগুন সমেত রানওয়ে দিয়ে নামছে রুশ বিমানটি৷ কালো ধোঁয়া কুণ্ডলী পাকিয়ে উঠে যাচ্ছে আকাশে৷ আবার কোনও ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কেবিনের জানলার বাইরে আগুন বেরোচ্ছে৷ যাত্রীরা সব আতঙ্কে চিৎকার করছেন৷ ঘটনায় একে একে মৃত্যু হয় ৪১ জন যাত্রীর৷
[আরও পড়ুন: ব্রিটিশ রাজপরিবারে নতুন সদস্যের আগমন, মা হলেন মেগান মর্কেল]
সোমবার থেকেই ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়৷ দুর্ঘটনার কারণ খুঁজতে বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ জোগাড় করার পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় পাইলটকে৷ স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাইলট ডেনিস ইয়েভদোকিমভ জানান, ‘দুর্ঘটনার পর আমরা যোগাযোগের সমস্ত চেষ্টা করি আমাদের এমারজেন্সি রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে৷ কিন্তু কয়েক মুহূর্তের জন্য সিগন্যাল পেয়েছিলাম৷ ওইটুকু সময়ে কয়েকটা শব্দ মাত্র বলতে পেরেছি৷ আমার মনে হয়, বিমানের ট্যাঙ্ক জ্বালানি ভরতি ছিল৷ তাই বজ্রপাতের সংস্পর্শে এসে আগুন লেগে গিয়েছে৷’
[আরও পড়ুন:সাড় ছিল না হাতে, তাই অসমাপ্ত লিওনার্দোর ‘মোনা লিসা’]
নিজের অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন এক বিমান সেবিকা৷ তাঁর কথায়, ‘বিমানটা আগুন নিয়েই টারম্যাক ধরে একেবারে ফড়িংয়ের মতো নামছিল৷ খুব মেঘ ছিল, ঝড়ও হচ্ছিল৷ হঠাৎ করে মনে হল, বিমানটায় কেউ যেন সজোরে আঘাত করল৷’ সুখোই সুপারজেট ১০০-এই মডেলের বিমানটি রাশিয়ায় প্রায় নতুন৷ ২০১১ সাল থেকে চালু হয়েছে৷ কিন্তু তার মধ্যেও তার ত্রুটি নিয়ে অভিযোগ উঠেছে বেশ কিছু৷ যদিও নিরাপত্তার স্বার্থেও এখনই এই মডেল বাতিল করতে চায় না রুশ প্রশাসন৷ তবে রবিবারের দুর্ঘটনা বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে৷ এর তদন্তে বিশেষ কমিটি তৈরির নির্দেশ দিয়েছে রুশ প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ৷
The post জ্বালানির ট্যাঙ্কে আগুন, রুশ বিমান দুর্ঘটনার নেপথ্যে বজ্রাঘাত appeared first on Sangbad Pratidin.