সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জাপান সফরে গিয়ে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর দেখা করলেন প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের স্ত্রী আকিয়ে আবের সঙ্গে। তাঁর হাতে তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চিঠি। শিনজো জমানায় টোকিও ও নয়াদিল্লির সম্পর্কের বন্ধন মজবুত হয়েছিল। তাঁর সেই অবদানের কথা স্মরণ করেই বিশেষ বার্তা পাঠিয়েছেন মোদি।
৬ থেকে ৮ মার্চ তিনদিনের জন্য জাপান সফরে গিয়েছেন জয়শংকর। সেখানে একাধিক কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। শুক্রবার তিনি দেখা করেন আবের স্ত্রীর সঙ্গে। এনিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে বিদেশমন্ত্রী লেখেন, ‘টোকিও সফরে আমি জাপানের প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের স্ত্রী আকিয়ে আবের সঙ্গে দেখা করেছি। ভারতের সঙ্গে জাপানের সম্পর্ক দৃঢ় করে অন্যমাত্রায় পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। এই সাক্ষাতে আমরা সেই কথাই স্মরণ করেছি। তাঁর হাতে আমি প্রধানমন্ত্রীর মোদির চিঠি তুলে দিয়েছি। পাশাপাশি আবের মায়ের প্রয়াণে সমবেদনা জানিয়েছেন মোদি। সেই শোকবার্তাও আকিয়ে আবেকে দিয়েছি।’
[আরও পড়ুন: ‘পাখির চোখ’ আফগানিস্তান, চাবাহার হয়ে বাণিজ্য বিস্তারে তালিবানের সঙ্গে আলোচনা দিল্লির!]
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের জুলাই মাসে পশ্চিম জাপানের নারা শহরে একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় আচমকাই আবের উপরে গুলি চালিয়েছিল এক আততায়ী। ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। সেসময় প্রিয় বন্ধুর শেষকৃত্যে গিয়েছিলেন মোদি। আবের মৃত্যুতে জাতীয় শোকও ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র সরকার। ভারতের সঙ্গে জাপানের সম্পর্ক বরাবরই ভালো। বেজিংয়ের সঙ্গে নয়াদিল্লির ব্যবসায়িক সম্পর্ক ক্রমেই মজবুত হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে জয়শংকরের এই সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চোখ রাঙাচ্ছে লাল ফৌজ। বিগত কয়েকমাসে সাগরে গতিবিধি বাড়িয়েছে চিন। বিশ্লেষকদের মতে, এই সফরে বেজিংকে রুখতে কৌশলগত দিক থেকে নানা আলোচনা হতে পারে দুদেশের মধ্যে।
কৌশলগত দিক থেকে আবে অত্যন্ত দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ছিলেন বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতকে নিয়ে ‘কোয়াড’বা চতুর্দেশীয় অক্ষ তৈরির পরিকল্পনা ছিল আবের মস্তিস্কপ্রসূত। ২০০৬-০৭-এ প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ফিলিপিন্সের রাজধানী ম্যানিলায় কোয়াড তৈরির উদ্দেশ্যে প্রথম বৈঠক করেন আবে। তারপ র কেটে গিয়েছে বেশ কয়েক বছর। শুরুর দিকে আবের ‘চিন উদ্বেগ’-কে ততটা গুরুত্ব না দিলেও ধীরে ধীরে আমেরিকা বুঝতে পারে যে সাগর পারে ‘লাল দৈত্য’ ক্রমে জেগে উঠছে। তার পর থেকেই বেজিংয়ের ‘গা জোয়ারি’ রুখতে নানা পদক্ষেপ করেছে এই জোট।