সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাজাখস্তানে এসসিও সামিটের ফাঁকে চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। জানা গিয়েছে, ভারত-চিন সীমান্ত ইস্যু নিয়ে বৈঠকে বসেন দুজনে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় পারস্পরিক সম্মান বজায় রাখা যে সবথেকে জরুরি তা আরও একবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন জয়শংকর।
লাদাখ থেকে শুরু করে অরুণাচল পর্যন্ত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চোখ রাঙাচ্ছে লালফৌজ। যা নিয়ে বারবার আপত্তি তোলা হয়েছে নয়াদিল্লির তরফে। বলা হয়েছে, সীমান্তে শান্তি না ফিরলে ভারত-চিন সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না। চব্বিশের নির্বাচন শেষে ফের বিদেশমন্ত্রীর দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার পর সীমান্ত সমস্যাগুলোর সমাধানের উপর জোর দিয়েছিলেন জয়শংকর। বৃহস্পতিবার, এসসিও সামিটের ফাঁকে ওয়াং ইয়ের সঙ্গে বৈঠকে সেবিষয়গুলোই তুলে ধরেন তিনি। দুই মন্ত্রীর বৈঠকে বিশেষভাবে উঠে আসে লাদাখের প্রসঙ্গ।
[আরও পড়ুন: ব্রিটেনে শুরু নির্বাচন, ১৪ বছর পর লেবার পার্টির সরকার? ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ ফল সুনাকদের?]
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, জয়শংকর ও ওয়াং ই দুজনেই কূটনীতি ও সামরিক আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত সংঘাত মেটানোর পথ খুঁজতে একমত হয়েছেন। বৈঠকের পর এনিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে জয়শংকর জানান, 'প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখাকে সম্মান করা এবং সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, পারস্পরিক সংবেদনশীলতা এবং পারস্পরিক স্বার্থ- এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ই আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে পরিচালিত করবে।' এর আগে এক অনুষ্ঠানে জয়শংকর জানিয়েছিলেন, সীমান্ত সংঘাতের ফলে কিন্তু কোনও ভারত-চিন কেউই উপকৃত হয়নি। বরং কীভাবে উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সমাধান করা যায় সেনিয়ে ভাবা প্রয়োজন।
বিশ্লেষকদের মতে, এদিনের বৈঠকে চিনা বিদেশমন্ত্রীর কাছে ভারতের বিদেশনীতি আরও একবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন জয়শংকর। ভারত সবসময় শান্তিপূর্ণ বৈঠক ও আলোচনার মধ্যে সমস্যা সমাধানে বিশ্বাসী। সংঘাত জিইয়ে রাখতে কখনই আগ্রহী নয় নয়াদিল্লি। শান্তি বজায় রাখার ক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্মান বজায় রাখাই জরুরি। কিন্তু দেশকে অশান্ত করার চেষ্টা করলে তা কখনই বরদাস্ত করা হবে না।
বলে রাখা ভালো, ২০২০ সালের ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় মুখোমুখি হয় ভারত ও চিনের ফৌজ। দুপক্ষের জওয়ানরাই লোহার রড ও কাঁটাতার জড়ানো হাতিয়ার নিয়ে বেশ কয়েক ঘণ্টা লড়াই করেন। রক্তক্ষয়ী সেই সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান শহিদ হন। ১৯৭৫ সালে পর সেবারই প্রথম প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। কার্যত যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়। অবশেষে পরিস্থিতি শান্ত করতে কয়েক দফা আলোচনায় বসে দুই দেশের সেনাবাহিনী।