shono
Advertisement

এবার সাগর-কলকাতা রুটে রাতেও চলবে জাহাজ, বিদেশ থেকে আসছে ‘নাইট নেভিগেশন’ সিস্টেম

‘কোয়েস্টার’ সফটওয়্যার কিনতে কেন্দ্রকে চিঠি কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দরের।
Posted: 01:46 PM Oct 08, 2022Updated: 09:49 PM Oct 08, 2022

স্টাফ রিপোর্টার: আগামী ছ’মাসের মধ্যে শুরু হতে চলেছে সাগর ও কলকাতার মধ্যে নৈশকালীন জাহাজ চলাচল। রাতের সাগরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে পৌঁছে যাওয়া যাবে গন্তব্য। শুক্রবার একথা জানিয়েছেন কলকাতা বন্দরের চেয়ারম‌্যান বিনীত কুমার। এজন‌্য প্রয়োজনীয় ‘নাইট নেভিগেশন’ ব‌্যবস্থা হাতে পেতে বেলজিয়ামের অ‌্যান্টোয়ার্প বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাবার্তাও শেষ। সেখান থেকে ‘কোয়েস্টার’ সফটওয়‌্যার কেনার জন‌্য কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রকের কাছে চিঠিও পাঠিয়ে দিয়েছে কলকাতার শ‌্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দর।

Advertisement

হলদিয়া ডকে নৈশকালীন পথনির্দেশ বা ‘নাইট নেভিগেশন’ সুবিধা থাকলেও কলকাতা ডকে এই সুবিধা নেই। যে কারণে শুধুমাত্র দিনের আলোতেই হুগলি নদী দিয়ে সাগর ও কলকাতার মধ্যে জাহাজ চলাচল করে থাকে। এই সমস‌্যা মেটাতে বেশ কয়েক মাস আগে প্রয়োজনীয় সফটওয়‌্যার কিনতে বেলজিয়ামের নদীবন্দর অ‌্যান্টোয়ার্পের সঙ্গে যোগাযোগ করেন কলকাতা বন্দর কর্তারা। এদিন কুমার জানান, “ইতিমধ্যেই পাঁচজন পাইলটের একটি টিমকে অ‌্যান্টোয়ার্প পাঠানো হয়েছিল। আগামী দিনে বন্দর আধিকারিকদের আরেকটি টিম সেখানে যাচ্ছে। অ‌্যান্টোয়ার্প থেকেও একটি বিশেষজ্ঞ দল কলকাতায় আসছে এখানকার বিষয়গুলি দেখতে। আশা করছি, আগামী দু’মাসের মধ্যে কলকাতা থেকে উলুবেড়িয়া পর্যন্ত ‘নাইট নেভিগেশন’ চালু হয়ে যাবে। সাগর পর্যন্ত গোটা ২৩০ কিমি নদীপথের বাকি অংশে এই ব‌্যবস্থা চালু হবে ছ’মাসের মধ্যে।”

[আরও পড়ুন: স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক, রাগের বশে মুর্শিদাবাদে ব্যবসায়ীকে খুন স্বামীর]

কুমার জানান, ১৭ থেকে ২০ কোটি টাকা দামের নতুন সফটওয়‌্যারে ‘নাইট নেভিগেশন’-এর জন‌্য তিনটি বিষয়কে সামনে রাখা হচ্ছে। এক, হুগলি নদীর দু’ধারে পাইলটদের সুবিধার্থে কয়েকটি কাঠামোতে আলো বসিয়ে বাতিস্তম্ভ হিসাবে ব‌্যবহার করা। দুই, নতুন সফটওয়‌্যারের সাহায্যে নদীপথের নির্দিষ্ট চ‌্যানেলের দু’পাশে আলোকিত ভারচুয়াল ব্যবস্থা রাখা। তিন, কৃত্রিম বুদ্ধির সাহায্যে দূরত্ব, নাব‌্যতা ও স্রোতের গতিপ্রকৃতি অনুযায়ী সঠিক গতিপথ জানিয়ে দেওয়া। ফলে বন্দরের পাইলট নিজস্ব ল‌্যাপটপে সফটওয়‌্যারের সাহায্যে জাহাজকে সঠিক পথ দেখাতে পারবেন সহজেই। “এই ব‌্যবস্থা চালু হলে অন্তত ২৪ ঘণ্টা সময় বঁাচবে এই পথে। ফলে পণ‌্য বহনের খরচও কমবে অনেকটা।’’ বলেন কুমার।

কলকাতা বন্দর চেয়ারম‌্যান হিসাবে শনিবারই শেষদিন বিনীত কুমারের। টানা পাঁচ বছর রীতিমতো সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের পর দিল্লি ফিরে যাচ্ছেন ‘ইন্ডিয়ান রেলওয়ে সার্ভিস অফ ইলেকট্রিক‌্যাল ইঞ্জিনিয়ার্স’-এর এই আধিকারিক। দু’বছরের করোনাকালের কঠিন সময়ে চ‌্যালেঞ্জের মোকাবিলা কলকাতা বন্দর করেছে তাঁর নেতৃত্বেই। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে তাঁর আমলেই সর্বোচ্চ ৬৪ মিলিয়ন টন পণ‌্য পরিবহণ করে নজির গড়েছিল এই বন্দর। এদিন কুমার জানান, চলতি বছর সেই রেকর্ড ভেঙে ৬৫ মিলিয়ন টন বা তার বেশি পণ‌্য পরিবহণের লক্ষ‌্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। “যার মধ্যে প্রথম ছ’মাসে ৩০.৫২ মিলিয়ন টন পণ‌্য পরিবহণ করা হয়ে গিয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি। নৌ-বাণিজ্যের হিসাবে, আগামী ছ’মাস সুবিধাজনক মরশুম। ফলে লক্ষ‌্যমাত্রায় পৌঁছতে সমস‌্যা হওয়ার কথা নয়।

[আরও পড়ুন: আজ তারাপীঠে তারা মায়ের আবির্ভাব দিবস, ভক্তের ঢল, জানুন এই দিনের মাহাত্ম্য]

পারফরম‌্যান্সের বিচারে দেশের বৃহৎ বন্দরগুলির মধ্যে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে কলকাতা। যাকে নিজের কর্মজীবনের বড় সাফল‌্য বলেই দেখছেন বিনীত কুমার। পাশাপাশি তাঁর আমলেই বাংলাদেশের জলপথ ব‌্যবহার করে কলকাতা থেকে পণ‌্য পাঠানো শুরু হয়েছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ‌্যগুলিতে। তিনি জানান, হাওড়া ব্রিজের মধ‌্যবর্তী অংশে বিশেষ ধরনের স্বচ্ছ পর্দা লাগিয়ে লাইট অ‌্যান্ড সাউন্ড শো এবং ব্রিজকে আলো দিয়ে সৌন্দর্যায়নের জন‌্য ৩৫ কোটি টাকার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে দিল্লিতে। পাশাপাশি আর্মেনিয়ান ঘাট ও প্রিন্সেপ ঘাট-সহ তিনটি ঘাটে গঙ্গাতীর সৌন্দর্যায়নের কাজও শুরু হবে শীঘ্রই।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement