শেখর চন্দ্র, আসানসোল: একলাফে শ্রমিকদের বেতন বাড়ল আড়াই হাজার টাকা। এতে আসানসোল-দুর্গাপুরের ক্ষুদ্রশিল্পের ৯০টি কারখানার প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক উপকৃত হবেন। আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সংগঠন শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে সরব ছিল। সংগঠনের চাপে অবশেষে সেই দাবি মানল মালিক কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি আসানসোলের শ্রম দপ্তরে মালিক পক্ষ ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের বৈঠক হয়। সেখানেই বেতন বৃদ্ধির বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। এই সিদ্ধান্তে খুশি শ্রমিকরা।
আইএনটিটিউসি সূত্রের খবর, প্রায় সাড়ে চারবছর আটকে থাকার পর ক্ষুদ্র শিল্পে নতুন বেতন চুক্তি সম্পন্ন হল শিল্পাঞ্চলে। শ্রমদপ্তরের তৎপরতায় শ্রমিক সংগঠনের দাবি মেনে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আইএনটিটিইউসি জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটক বলেন, “শ্রমিক স্বার্থ রক্ষায় আমাদের সরকার ও সংগঠন অঙ্গীকারবদ্ধ। তাই বকেয়া বেতন চুক্তি স্বাক্ষর করানো ছিল আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।” চলতি বছরেই মাঝারি ও বৃহৎ আয়রন, স্টিল কারখানার শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি হয়। বেতন বৃদ্ধি হয় প্রতি মাসে ১ হাজার ১০০ টাকা করে। উপকৃত হন ৩০০টি কারখানার ৫০ হাজার শ্রমিক। অভিজিৎবাবু জানান, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৎপরতায় একের পর এক সংগঠিত ও অসংগঠিত শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি হচ্ছে। অর্থনীতি চাঙ্গা হচ্ছে শিল্পাঞ্চলে।
[আরও পড়়ুন: সশরীরে আদালতে অর্পিতা, ‘টাকা কার?’, জবাবে কী বললেন পার্থ ‘ঘনিষ্ঠ’?]
সূত্রের খবর, করোনার আগে অর্থাৎ ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই কারখানাগুলিতে নতুন বেতন চুক্তি বকেয়া ছিল। মহামারীর সময় বেতন বাড়ানোর কথা আর ওঠেনি। যার জেরে আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন শ্রমিকরা। বেতন বৃদ্ধি নিয়ে অবশ্য প্রথম থেকেই সরব ছিল আইএনটিটিইউসি। তারা শ্রমদপ্তর ও মালিকপক্ষকে লাগাতার চাপ দিতে থাকে। সম্প্রতি আসানসোল শ্রমদপ্তরের অফিসে মালিকপক্ষের তরফে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি গৌতম মিত্র, সাধারণ সম্পাদক রতন আগরওয়াল। ছিলেন আইএনটিটিইউসির শান্তনু সেন, কল্লোল বন্দ্যোপাধ্যায়, সিটুর উত্তম শ্যাম। শ্রম দপ্তরের প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন যুগ্ম লেবার কমিশনার শ্যামল দত্ত, ডেপুটি লেবার কমিশনার দেবশ্রী চট্টোপাধ্যায়।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ২০১৯ সালের জন্য প্রতিদিন বর্ধিত মজুরি দেওয়া হবে ২২ টাকা, ২০২০ সালের জন্য ১৩ টাকা, ২০২১ সালের জন্য ১৫ টাকা, ২০২২ সালের জন্য ৩৬ টাকা এবং ২০২৩ সালের জন্য ৯ টাকা করে। আগের বছর গুলির বকেয়া মজুরি এরিয়ার হিসেবে চলতি বছরে মিটিয়ে দেওয়া হবে। ফলে এক লাফে আড়াই হাজার টাকা বেতন বৃদ্ধিতে খুশির হাওয়া শ্রমিক মহলে। স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রতন আগরওয়াল বলেন, ‘‘এই মজুরি শ্রমিকদের প্রাপ্য ছিল। তাদের দাবি মেটাতে পেরে আমরা খুশি।’’স্পঞ্জ আয়রন সহ বহু কল-কারখানা রয়েছে পশ্চিম বর্ধমানে। সেই সব কারখানার প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক উপকৃত হবেন এই বেতন বৃদ্ধিতে।