অতিমারীতে এদের কেউ হারিয়েছে বাবাকে। কেউ বা মাকে। কেউ কেউ দু’জনকেই হারিয়ে নিঃস্ব, বিপন্ন। এমন শিশুদের পাশে দাঁড়াতেই ‘সংবাদ প্রতিদিন’ ও ‘ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ’র মানবিক প্রয়াস ‘আদর’। এমন শিশুদের সন্ধান জানাতে পারেন আপনিও। যোগাযোগ করুন ৯০৮৮০৫০০৪৮ নম্বরে।
রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: স্ত্রী ন’মাসের অন্তঃসত্ত্বা। চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছেন, সময় আসন্ন। আর মাত্র কয়েকটা দিন, তার পরেই বাড়িতে আসবে নতুন প্রাণ। জন্মের আগেই যার নামের আগে বসে গিয়েছে ‘পিতৃহীন’। সৌজন্যে কোভিড-১৯ (Covid-19)।
কোনওমতে দিনযাপন করছিল আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) শহরের বাবুপাড়া হাইস্কুল (Babupara High School) রোডের দে পরিবার। করোনা তাঁদের দাঁড় করিয়েছে অন্ধকার এক সরণিতে।
[আরও পড়ুন:বহরমপুরে বোমা বিস্ফোরণ, উড়ল TMC কর্মীর বাড়ির টিনের চাল, গুরুতর জখম বৃদ্ধা মা]
বাড়ির একমাত্র রোজগেরে শেখর দে কে ছিনিয়ে নিয়েছে কালান্তক ভাইরাস। প্রয়াত শেখরবাবুর একটি তিন বছরের সন্তান। আরও এক প্রাণ স্ত্রীর পেটে নড়াচড়া করছে।
নিম্নবিত্ত এই পরিবারে আয়ের উপায় বলতে ছিল ছোট্ট একটা পানের দোকান। রোজগার অল্প হলেও শান্তি ছিল ছোট পরিবারটায়। সংসার চালাতে উদয়াস্ত পরিশ্রম করতেন শেখর। এলাকায় ‘অমায়িক ছেলে’ হিসাবে সুনাম ছিল তাঁর। করোনার প্রথম ঢেউয়ে প্রথম ধাক্কা। বিধিনিষেধের কারণে লকডাউনে বন্ধ করতে হয় পানের দোকান।
তবে সে ধাক্কা সামলে নিয়েছিলেন শেখর। শুরু করেছিলেন আমের ব্যবসা। মন্দ চলছিল না। রোজগারও হচ্ছিল মোটামুটি। ব্যবসা সামলাতে দৌড়াদৌড়ি করতে হত। খেয়ালই করেননি কখন শরীরে অনুপ্রবেশ ঘটেছে ভাইরাসের। আকস্মিক একদিন ঘুসঘুসে জ্বর। সঙ্গে বেদম কাশি। লালারস পরীক্ষায় ধরা পড়ল করোনা।
[আরও পড়ুন:Taliban Terror: আফগানিস্তানে রাজনৈতিক পালাবদলে মাথায় হাত বাঁকুড়ার পাগড়ি শিল্পীদের, বাজার মন্দা]
আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে একদিন থাকার পর শিলিগুড়ির (Siliguri) একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গত ২৫ জুলাই সমস্ত লড়াই শেষ। শিলিগুড়ির ওই বেসরকারি হাসপাতালেই করোনার কাছে হেরে যান শেখর। শেখরের মা রেখাদেবী বিধবা হয়েছেন মাস ছয়েক আগে। তাঁর কথায়, “স্বামী মারা যাওয়ার পর ছেলেই ছিল আমাদের শেষ ভরসা। সে যে এভাবে চলে যাবে ভাবতেই পারিনি।”বাবার মৃত্যুর পর শেখর বলত, “মা, চিন্তা কোরো না। আমি ঠিক সংসার চালিয়ে নেব।” সেই ছেলে চলে যাওয়ার পর এখন চিন্তায় পরিবার। কে চালাবে সংসার? কে জোগাবে খাবার-দাবার।
মাত্র পঁচিশ বছর বয়স শেখরের স্ত্রী টুম্পা দে-র (Tumpa Dey)। এরই মধ্যে মুখে পড়ে গিয়েছে বার্ধক্যের ছাপ। ন’মাসের অন্তঃসত্ত্বার চোখের জল শুকিয়ে গিয়েছে কেঁদে কেঁদে। স্বামীর চিকিৎসার জন্য ৮ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। টানা ২৪ দিন ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে। স্ত্রীর গলায় আশঙ্কা, “জমানো টাকা সব শেষ। কাল আমাদের কপালে কী লেখা আছে কেউ জানে না। কোনও সহৃদয় ব্যক্তি আমাদের সাহায্য করলে ভাল হয়।” এখনও স্কুলে ভর্তি করতে পারেননি তিন বছরের শিশুকে। আগামীতে যে আসছে তাকে বড় করে তুলতেও বিপুল খরচ। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্যকে হারিয়ে দিশেহারা দে পরিবার।
[আরও পড়ুন:কুলটিতে যাত্রীবোঝাই বাস থেকে উদ্ধার বোমা, মিলল কোড লেখা চিরকূটও, তদন্তে সেনা গোয়েন্দারা]
পাশে চাই আপনাকেও
এই সবহারানো অসহায় শিশুদের পাশে দাঁড়াতে পারেন আপনিও। সরাসরি অর্থসাহায্য পাঠানো যাবে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অ্যাকাউন্টে।
State Bank of India, Ballygunge Branch,
A/C No : 30391077575
IFS Code : SBIN0003951
Mobile : 9433607740 (Debashish Maharaj)
বিঃ দ্র: টাকা পাঠানোর পর আপনার নাম,ঠিকানা ও সাহায্যের পরিমাণ স্ক্রিনশট সহ হোয়াটসঅ্যাপ করুন 9433607740 ও 9088050048 নম্বরে। আমরা যথাসময়ে তা প্রকাশ করব। সাহায্যকৃত অর্থ 80G ধারা অনুযায়ী করমুক্ত।