সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সে কতশত যুগ আগেকার কথা! সংসারের মোহ ছিন্ন করে দুঃখমোচনের উপায় সন্ধানে পায়ে পায়ে কোথা থেকে কোথায় এসে পৌঁছেছিলেন রাজার ছেলে। সেই মহাকারুণিক গৌতম 'বুদ্ধ' হন এদেশেরই বৃক্ষতলে, মাটি-জল-হাওয়ায়। বর্তমানে বিহারের বুদ্ধগয়া পবিত্র স্থান হিসেবে UNESCO হেরিটেজ সাইটের অন্যতম। এবার সেই বুদ্ধগয়ার মহাবোধি মন্দির নিয়ে নয়া দাবি সাম্প্রতিক গবেষণায়। বিহারের সাংস্কৃতিক বিভাগের একাংশ এবং ইংল্যান্ডের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণার দাবি, স্যাটেলাইট ছবিতে ইঙ্গিত, মহাবোধি মন্দিরের গর্ভে বিপুল প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ (Archaeological Wealth) লুকিয়ে রয়েছে। কী সেই সম্পদ? মনে করা হচ্ছে, এখানে খননকাজ করলে ইতিহাসের সেই বিখ্যাত পরিব্রাজক হিউ-এন-সাং সম্পর্কিত বহু তথ্য আরও পাওয়া যাবে। আর তাতেই ওয়াকিবহাল মহলের উৎসাহ তুঙ্গে উঠেছে।
BHDS অর্থাৎ বিহার (Bihar)হেরিটেজ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির শিল্প-সংস্কৃতি ও যুব বিভাগের সঙ্গে যৌথভাবে গবেষণা করছে ইংল্যান্ডের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়। স্যাটেলাইট ছবিতে (Satelite Image) এই গবেষকদল নতুন তথ্য পেয়েছে বলে দাবি। এ বিষয়ে BHDS-এর তরফে অতিরিক্ত মুখ্যসচিব হরজোত কৌর জানিয়েছেন, বিশ্ব হেরিটেজ সাইট (World Heritage Site) বুদ্ধগয়ার মন্দিরটি এবং তার আশপাশের চত্বরে মাটি খুঁড়লে প্রচুর প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ পাওয়া যাবে, আমাদের গবেষণায় তেমনই ইঙ্গিত। তবে তা খুঁজে পেতে আরও খননকাজ দরকার।'' আর কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি, চিনা পরিব্রাজক হিউ-এন-সাংয়ের পদচিহ্ন সম্বলিত প্রত্নতাত্ত্বিক তথ্য মিলতে পারে এখান থেকে।
[আরও পড়ুন: চাকরি হারিয়ে নতুন দায়িত্ব! কোচবিহার তৃণমূলের সম্পাদক পরেশকন্যা অঙ্কিতা]
কী সম্পদ পাওয়া যেতে পারে মহাবোধি মন্দিরের (Mahabodhi Temple) গর্ভে? সে বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন হরজোত কৌর। তাঁর কথায়, ''৫০ মিটার উঁচু মন্দির ঘিরে একাধিক স্তূপবেষ্টিত ৬টি পবিত্র স্থান, যা গৌতম বুদ্ধর বোধিলাভের স্থল হিসেবে পরিচিত ও বিখ্যাত, তার ভিতর ও বাইরে পরিধি বরাবর একাধিক প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ পাওয়া যেতে পারে। স্যাটেলাইট ছবিতে আমরা দেখতে পেয়েছি, কীভাবে হিউ-এন-সাংয়ের (Xuanzang)পদচিহ্ন বরাবর মন্দিরের গঠন বদলেছে। কীভাবে নৈরঞ্জনা নদীর গতিপ্রবাহ পূর্ব থেকে পশ্চিমে পরিবর্তিত হয়েছে, তারও ইঙ্গিত রয়েছে। সাম্প্রতিক গবেষণা অনুযায়ী, সুজাতা স্তূপ আর মন্দির অতীতে নদীর একই পাড়ে অবস্থিত ছিল। আর এসবের যথাযথ প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ পাওয়া গেলে তা হবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।''
[আরও পড়ুন: মানিকতলা তৃণমূলের দখলেই, বিপুল ভোটে জয়ী সাধনজায়া সুপ্তি]
আসলে জ্ঞানের ভাণ্ডার তো অফুরন্ত। ইতিহাস, প্রত্নতত্ত্বের রহস্য তার চেয়েও ঢের বেশি। আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার উন্মোচনও করবে মানুষ। তাই মহাবোধি মন্দির নিজের গর্ভে আরও কী সম্পদ লুকিয়ে রেখেছে, তা নিয়ে উৎসাহ তো স্বাভাবিক।