সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের নয়া কীর্তি বাঙালি অভিযাত্রী সত্যরূপ সিদ্ধান্তের। প্রথম অসামরিক বাঙালি হিসাবে সেভেন্থ সামিট অর্থাৎ দুনিয়ার সবকটি মহাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয় করেছিলেন আগেই। আর এবার স্পর্শ করলেন দক্ষিণ মেরু। তাও কিনা প্রথম অসামরিক ভারতীয় হিসেবে এই নজির গড়লেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা নাগাদ এই কীর্তি অর্জন করেন তিনি।
[শিখরে বাংলা, প্রথম বাঙালি হিসাবে সাতটি শৃঙ্গ জয় সত্যরূপ সিদ্ধান্তর]
২৩ ডিসেম্বর ইউনিয়ন হিমবাহ থেকে শুরু করেছিলেন যাত্রা। এরপর দীর্ঘ ১১১ কিলোমিটার বিপদসংকুল রাস্তা অতিক্রম করেন তিনি। আর সেটা করতে মোট ৬ দিন সময় নিলেন সত্যরূপ। গোটা রাস্তাটাই স্কি করে নিজের গন্তব্যে পৌঁছলেন বাঙালি সত্যরূপ। তাঁর এই অনন্য নজিরে স্বভাবতই খুশির হাওয়া তাঁর পরিবার এবং তাঁর ক্লাব সোনারপুর আরোহীর সদস্যদের মধ্যে। তবে এখানেই শেষ নয়। দক্ষিণ মেরু অভিযান সফল হওয়ার পর এবার সত্যরূপের গন্তব্যস্থল চিলি। সেখানে তিনি আরও একটি অভিযান করবেন। পাড়ি দেবেন চিলির উচ্চতম পর্বত তথা বিশ্বের উচ্চতম জীবন্ত আগ্নেয়গিরিতে। ৬৮৯৩ মিটার দীর্ঘ এই পর্বত জয় করে সত্যরূপের কলকাতায় ফেরার কথা আগামী বছরের ২২ জানুয়ারি।
[মানসিক অস্থিরতা তৈরি করে ফেসবুক, মানল কর্তৃপক্ষই]
এর আগে সপ্তম শৃঙ্গ জয়ের লক্ষ্যে গত ৩০ নভেম্বর তিনি রওনা দিয়েছিলেন। মুম্বই থেকে আমস্টারডাম হয়ে চিলিতে পৌঁছন সত্যরূপ। সেখানে মিলিত হন দলের আরও চার অভিযাত্রীরা সঙ্গে। এরপর ৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় মূল অভিযান। অ্যান্টার্কটিকার ভিনসন ম্যাসিফে উঠার আগে আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে কয়েক দিন সময় কেটে যায় তাঁর। এরপর চলে অনুশীলন। অ্যান্টার্কটিকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গে ওঠার সময় আবহাওয়াও ছিল বিরূপ। প্রায় -৫০ ডিগ্রি ঠান্ডার মধ্যেও সত্যরূপদের দল গত ১৬ ডিসেম্বর ভারতীয় সময় সকাল সাড়ে পাঁচটায় পৌঁছে যায় শৃঙ্গে। অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়েই তাঁরা এই অভিযানটি করেছিলেন। সত্যরূপদের কাছে খবর ছিল আবহাওয়া আরও খারাপ হতে পারে। তার জন্য ওদিনই তাঁরা শৃঙ্গ ছোঁয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এই শৃঙ্গের উচ্চতা অন্যান্য শৃঙ্গের তুলনায় অনেকটাই কম। মাত্র ৪৮৯২ মিটার। তবে বিশেষজ্ঞদের মতেস উচ্চতা কম হলেও প্রবল ঠান্ডার মোকাবিলা করাই পর্বতারোহীদের কাছে ছিল প্রধান চ্যালেঞ্জ। ভিনসন ম্যাসিফের পর দক্ষিণ মেরুর শেষ সীমায় পৌঁছানোটা আরও একটি সাফল্য সত্যরূপের কাছে। সেই সঙ্গে তাঁর মুকুটে জুড়ল আরও একটি পালক।
[বর্ষবরণের রাতে উদ্দাম নাচ-গান বন্ধ বিধাননগরে]
এবছর এই অভিযানের জন্য বিপুল খরচ হয়েছে সত্যরূপের। এই অভিযানের জন্য তাঁর প্রায় ৬৬ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থা সাহায্য করলেও প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা সত্যরূপকে ঋণ নিতে হয়েছে। ইএমআই গুনতে গুনতেই তিনি অভিযানে গিয়েছেন। এমনকী স্বপ্নপূরণের জন্য দিনে দুটি অফিসে কাজ করে অভিযানের টাকা সংগ্রহ করেছেন। তবে এখানেই শেষ নয়, এরপর উত্তর মেরুতেও অভিযান করবেন সত্যরূপ।
[হানিমুনে জোর করে মদ খাইয়েছে স্বামী, থানায় অভিযোগ নববধূর]
The post ফের সাফল্য, দক্ষিণ মেরু স্পর্শ করে নজির গড়লেন সত্যরূপ appeared first on Sangbad Pratidin.