সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আন্তর্জাতিক মঞ্চে দ্রুত পালটাচ্ছে সমীকরণ। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের মিত্রদেশগুলিতে মোতায়েন মিসাইল সিস্টেম সরিয়ে নিচ্ছে আমেরিকা (America)। সেই তালিকায় রয়েছে সৌদি আরবও। ফলে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন রিয়াধ। যদিও দেশটির বক্তব্য, মার্কিন হাতিয়ার প্রত্যাহার করা হলেও জাতীয় নিরাপত্তায় কোনও প্রভাব পড়বে না।
[আরও পড়ুন: মেক্সিকো সীমান্তে মাফিয়াদের গুলির লড়াই, প্রাণ গেল ১৮ নাগরিকের]
বেশ কয়েক বছর ধরেই ইরাক, কুয়েত, জর্ডন ও সৌদি আরবের মতো মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে ‘প্যাট্রিয়ট মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম’ মোতায়েন রেখেছে আমেরিকা। এছাড়া, ওই জায়গাগুলিতে ‘থাড মিসাইল সিস্টেম’ও রয়েছে। বিভিন্ন সেনঘাঁটিতে থাকা ওই হাতিয়ারগুলির চালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রচুর সংখ্যায় সেনা ও টেকনিশিয়ান রাখতে হচ্ছে আমেরিকাকে। সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে খবর, এবার সেই সংখ্যা দ্রুত কমিয়ে আনতে চলেছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। জানা গিয়েছে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই কুয়েত, ইরাক, জর্ডন ও সৌদি আরব থেকে বেশ কয়েকটি মিসাইল সিস্টেম সরিয়ে ফেলতে ‘US Central Command’-কে নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন। এহেন পরিস্থিতিতে সৌদি মিত্রবাহিনীর প্রধান তুর্কি আল-মালিকি বলেন, “আমেরিকার মিসাইল সিস্টেম না থাকলেও সৌদি আরবের এয়ার ডিফেন্স সেই অর্থে প্রভাবিত হবে না। নিজেদের দেশকে বাঁচানোর মতো ক্ষমতা আমাদের আছে।”
উল্লেখ্য, সৌদি আরবের নেতৃত্বে ইয়েমেনে ইরানের সমর্থিত হাউথি বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই করছে মিত্রবাহিনী। ওই বাহিনীতে রয়েছে জর্ডন, কাতার ও সুদানের সেনারা। বেশ কয়েকদিন ধরে চলা লড়াইয়ে দুই পক্ষেরই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রচুর। বিগত দিনে বেশ কয়েকবার সৌদি আরবের তেল শোধনাগারগুলিতে রকেট হামলা চালিয়েছে হাউথিরা। গতকাল অর্থাৎ রবিবারও বেশ কয়েকটি হাউথি ড্রোন ধ্বংস করে সৌদি ফৌজ। এহেন পরিস্থিতিতে মার্কিন মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম না থাকলে অনেকটাই ব্যাকফুটে চলে যাবে সৌদি আরব বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা।তাঁরা মনে করছেন, আমেরিকার মাথা ব্যথার প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে রাশিয়া ও চিন। ইউক্রেনের হাত থেকে ক্রিমিয়া ছিনিয়ে নিয়ে ইউরোপে নিজের অভিসন্ধি সাফ করে দিয়েছে মস্কো। একইভাবে, দক্ষিণ চিন সাগরে আগ্রাসন চালিয়ে আমেরিকাকে বিপাকে ফেলেছে বেজিং। ফলে ওই দুই দেশকে নজরে রেখেই মিসাইল মোতায়েন করতে চলেছে পেন্টাগন। তাই ইরানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা চালিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের ফ্রন্টে আপাতত স্থিতাবস্থা বজায় রাখার পক্ষেই বাইডেন প্রশাসন।