সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাংবাদিক জামাল খাশোগ্গিকে (Jamal Khashoggi) হত্যার অভিযোগ রয়েছে সৌদি আরবের যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের বিরুদ্ধে। ফলে আন্তর্জাতিক মঞ্চে রীতিমতো চাপের মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে। এহেন সময়ে প্রকাশ্যে এল আরও এক বিস্ফোরক তথ্য। এক প্রাক্তন সৌদি গোয়েন্দা আধিকারিক দাবি করেছেন, সৌদি আরবের রাজা আবদুল্লাকে হত্যার ষড়যন্ত্র রচনা করেছিলেন সলমন।
[আরও পড়ুন: ব্রিটেনে হদিশ মিলল কোভিডের আরও ভয়ংকর প্রজাতির! ভারতেও প্রবেশের আশঙ্কা]
২০১৫ সালে মৃত্যু হয় সৌদি আরবের রাজা আবদুল্লার। তারপরই সৌদি সিংহাসনে বসেন তাঁর সৎভাই সলমন বিন আবদুল্লাজিজ। আর ইনিই হচ্ছেন সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের বাবা। জানা গিয়েছে, সৌদি রাজা আবদুল্লাকে ২০১৪ সালে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন স্বয়ং মহম্মদ বিন সলমন। আর এই বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন সাদ আলজাবরি নামের এক প্রাক্তন সৌদি গোয়েন্দা আধিকারিক। ৬২ বছরের ওই গোয়েন্দা কর্তা বর্তমানে কানাডায় নির্বাসনে রয়েছেন। একটি মার্কিন টিভি চ্যানেলের জনপ্রিয় শোয়ে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাদ স্পষ্ট ভাষায় দাবি করেন, যুবরাজ সলমন তখন বলেছিলেন, রাশিয়া থেকে এমন বিষাক্ত আংটি তিনি আনিয়েছেন, যেটি পরে আবদুল্লার সঙ্গে করমর্দন করলেই মৃত্যু হবে তৎকালীন সৌদি রাজার।
এদিকে, সলমনের রক্তচাপ বাড়িয়ে, অবদুল্লার বিরুদ্ধে চক্রান্তের একটি ভিডিও তাঁর কাছে রয়েছে বলে দাবি করেছেন সাদ। তবে মার্কিন টিভি শোয়ে সেই ভিডিও প্রকাশ করেননি তিনি। তাঁর দাবি, তাঁকেও যে কোনও দিন মেরে ফেলতে পারেন মহম্মদ বিন সলমন। তাঁর দুই সাবালক সন্তানকে সৌদি সরকার বন্দি করে রেখেছে বলে দাবি সাদের। যাতে সাদ কানাডা ছেড়ে সৌদি আরবে ফিরতে বাধ্য হন। তবে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি রিয়াধ।
উল্লেখ্য, রাজনৈতিক বিরোধীদের পথ এথেকে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে যুবরাজ সলমনের বিরুদ্ধে। এছাড়া, ওয়াশিংটন পোস্ট-এর সাংবাদিক জামাল খাশোগ্গিকে হত্যার নির্দেশও দিয়েছিলেন তিনি বলে দাবি করেছে আমেরিকা। সৌদি রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক খাশোগ্গিকে রাজমহলের অন্দরের একাধিক কেচ্ছা ফাঁস করেছিলেন। ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর ইস্তানবুলের সৌদি দূতাবাসে খুন হন সাংবাদিক জামাল খাশোগ্গি। দ্বিতীয়বার বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করতে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। সৌদি রাজ পরিবারের পাশাপাশি সে দেশের যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত খাশোগ্গির খুনের পরেই সরব হয় তুরস্ক-সহ একাধিক দেশ। প্রাথমিকভাবে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে রিয়াধ। পরে অবশ্য বলা হয়, গুপ্ত ঘাতকের হাতে খুন হয়েছেন খাশোগ্গি। এই ঘটনার তদন্তে নেমে সন্দেহভাজন প্রায় ২৪ জনকে আটক করে সৌদি সরকার। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়। যদিও এই ঘটনার সঙ্গে মহম্মদ বিন সলমনের কোনও যোগ নেই বলেও সরকারিভাবে জানায় সৌদি আরব।