জোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: লড়াইটা শুরু হয়েছিল ৪৬ বছর আগে। সেদিনের প্রধান শিক্ষক আজ ৮৩ বছরের বৃদ্ধ। কিন্তু লড়াই থামেনি। বন্ধ হয়ে যাওয়া স্বপ্নের ইংরেজি মাধ্যমের প্রাথমিক স্কুল চালুর চেষ্টা আজও ছাড়েনি তিনি। মহকুমা শাসক, জেলাশাসক, নবান্নর দরজায় বারবার কড়া নাড়া সত্ত্বেও প্রশাসনিক জটিলতায় থমকে রয়েছে স্কুল।
উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড নেতাজি পল্লিতে বাস বহু পরিবারের। যাঁদের অধিকাংশই দিনআনা দিনখাওয়া। সেই কথা ভেবেই ৪৬ বছর আগে এলাকার মন্দির প্রাঙ্গণে কয়েকজন শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীদের নিয়ে অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় শুরু হয়েছিল। ওই এলাকারই বাসিন্দা সমীরণ দে ছিলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। স্কুলটি শুরু হওয়ার বছরখানেক বাদেই জায়গার অভাবে তা বন্ধ হয়ে যায়।
[আরও পড়ুন: EXCLUSIVE: মোদির সভায় বিজেপিতে যোগ, ভোটে তমলুকের প্রার্থী হচ্ছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়!]
সমীরণবাবু জানিয়েছেন, এলাকায় একটি জায়গা মিললেই সেখানে স্কুলটি নতুন করে শুরু হবে জানতে পেরে নতুন করে লড়াইটা শুরু করি। জমি দেখা হয়, জমির পরিমাণ ৮ কাঠার একটু বেশি। জমি মালিকের কাছ থেকে সেই জমিদানের মাধ্যমে স্কুল তৈরির সম্মতিও মেলে। শিক্ষা দপ্তরের তত্ত্বাবধানে জমিদাতার টাকা বরাদ্দ হলেও কোন অজানা কারণে সেই জমিতে স্কুল তৈরির কাজ কাজ থমকে রয়েছে। সমীরণবাবু বলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের গাফিলতিতেই পরিত্যক্ত জমিতে মাটি ফেলা হয়নি আজও। তবে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে নেতাজিপল্লির অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় তৈরির যাবতীয় ছাড়পত্র মিলেছে বহুকাল আগে।
দিশেহারা বৃদ্ধ তাঁর স্কুল তৈরির স্বপ্নপূরণ করতে ছুটে গিয়েছেন দিল্লি পর্যন্ত। রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের তরফে স্কুল তৈরির খরচে যাবতীয় ছাড়পত্র মিললেও ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের উদাসীনতায় আর অবহেলায় থমকে রয়েছে স্কুল তৈরির কাজ। সমীরনবাবুর এই লড়াইয়ে শামিল হয়েছেন এলাকার বহু মানুষ। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্কুল তৈরির প্রার্থনা জানিয়ে কেঁদে ফেলেন বৃদ্ধ সমীরনবাবু। বলেন, “দিদি যদি একটু নজর দিতেন তবে কাজটা খুব সহজে হত।” এ বিষয়ে প্রশাসনের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।