ধীমান রায়, কাটোয়া: স্মার্টফোনে আসক্ত পড়ুয়াদের অধিকাংশই। এই স্মার্টফোনে আসক্তির কারণেই ছাত্রছাত্রীদের অনেকের পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হচ্ছে। এদিকে মাধ্যমিক পরীক্ষা আর মাস তিনেক বাকি। আর তাই বাড়ি-বাড়ি ঘুরে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ‘অঙ্গীকারপত্র’ আদায় করে নিচ্ছেন শিক্ষকরা। যাতে মাধ্যমিকের আগে এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে পড়ুয়ারা স্মার্টফোনের পিছনে সময় অপচয় না করে। এমনই অভিনব পদক্ষেপ করেছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের মাজিগ্রাম বিশ্বেশ্বরী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুব্রত সাহা বলেন, “টেস্ট পরীক্ষা অর্থাৎ মাধ্যমিকের যোগ্যতা-নির্ণায়ক পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর, প্রত্যেক পরীক্ষার্থীদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে প্রেরণা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তাদের সুবিধা অসুবিধা নিয়ে খোঁজ রাখছি। বলা হচ্ছে, ভবিষ্যতের দিকে লক্ষ্য রেখে এই তিনটে মাস যেন তারা কোনওভাবে সময় নষ্ট না করে। অভিভাবকদের সঙ্গেও কথা বলছি।”
[আরও পড়ুন: গুজরাটে প্রথমবার ১৫০ পার বিজেপির, ভাঙল মোদির রেকর্ড]
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, মাজিগ্রাম বিশ্বেশ্বরী উচ্চ বিদ্যালয়ে এবছর ৪৫ জন পরীক্ষার্থী মাধ্যমিক দেবে। মাজিগ্রাম, মালিয়াড়া, চাকুলিয়া, আয়মাপাড়া, মাদপুর, ভাল্যগ্রাম, সাঁড়ি-সহ আরও একাধিক গ্রামের ছাত্রছাত্রীরা এই স্কুলে পড়াশোনা করে। এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের উৎসাহিত করছেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। শুরু উৎসাহ দেওয়াই নয়, স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুব্রত সাহা বলেন,”করোনা আবহে দীর্ঘদিন পড়ুয়ারা মূল ছন্দ থেকে বিছিন্ন ছিল। তার ফলে পড়ুয়াদের ভীষণভাবে ক্ষতি হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, শুধুমাত্র করোনা পরিস্থিতির মধ্যে পড়ুয়াদের স্মার্টফোনে আসক্তি বহুগুণ বেড়েছে। এটা ভীষণ ক্ষতিকারক হয়ে উঠেছে।”
জানা যায়, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের বাড়ি-বাড়ি পালা করে ঘুরছেন প্রধা নশিক্ষক এবং সহ-শিক্ষকরা। তাঁরা পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলছেন। পড়ুয়াদের কাছ থেকে অঙ্গীকারপত্র আদায় করছেন শিক্ষকরা। অঙ্গীকারপত্রে উল্লেখ করা হচ্ছে,”আমি স্বইচ্ছায়, স্বজ্ঞানে অঙ্গীকার করছি, এখন থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি কোনওভাবেই মোবাইল ফোন ও টেলিভিশনের জন্য সময় নষ্ট করব না। আমি আপ্রাণ চেষ্টা করব মাধ্যমিকে ভাল ফল করে বিদ্যালয়ের ও পরিবারের সুনাম বজায় রাখতে।” অঙ্গিকারপত্রে সাক্ষী হিসাবে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াদের অভিভাবকদের স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হচ্ছে।