স্টাফ রিপোর্টার: সাতদিনে ফর্সা করে দেব! এমন বিজ্ঞাপনে ভুলে ক্রিম মেখে হিতে বিপরীত। দফারফা হয়েছে ত্বকের। অনেকেই আর রোদে বেরোতে পারেন না। তার বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছিল ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ ডার্মাটোলজি, ভেনারোলজি, লেপ্রোলজি। ২০১৪ সালে তৈরি হয় টাস্ক ফোর্স। যে টাস্ক ফোর্সের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ডা. কৌশিক লাহিড়ী।
একঝাঁক চিকিৎসক মিলে স্টেরয়েডের ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক নিয়ে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। কখনও রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছেন। কখনও জনসচেতনতা বাড়াতে প্রচার করেছেন। বিফলে যায়নি তা। ২০১৭-’১৮ সালের পর থেকে ফর্সা হওয়ার ক্রিমের বিক্রি কমতে শুরু করে। রয়্যাল কলেজ অফ ফিজিশিয়ানস, (ইউকে) এবার ত্বকরোগ বিশেষজ্ঞদের এই লড়াইকে দিচ্ছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। আগামী ১০ জুলাই ‘এক্সেলেন্স ইন পেশেন্ট কেয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ তুলে দেওয়া হবে লড়াকু ত্বকরোগ বিশেষজ্ঞদের হাতে। যাঁদের প্রচারের জন্য স্টেরয়েড দেওয়া ক্ষতিকর ক্রিমের বিক্রি কমেছে।
পুরস্কার প্রাপকদের তালিকায় রয়েছেন দু’জন বাঙালি। ডা. কৌশিক লাহিড়ী, ডা. অরিজিৎ কুণ্ডু। ডা. কৌশিক লাহিড়ী জানিয়েছেন, বাজার চলতি সিংহভাগ ফর্সা হওয়ার ক্রিমে স্টেরয়েড রয়েছে। স্টেরয়েড মেশানো এইসব ক্রিম মেখেই ত্বকের জটিল দুরারোগ্য অসুখ ডেকে আনছেন বিভিন্ন বয়সের রোগীরা। কী ধরনের অসুখ?
কারও মুখে দগদগে পোড়া দাগ, কারও আবার দেখা যাচ্ছে হরমোনের গোলমাল। স্টেরয়েডের লাগামছাড়া প্রয়োগে ত্বকের প্রতিরোধ ক্ষমতার দফারফা হয়। আমজনতার স্বার্থের কথা ভেবেই স্টেরয়েড যুক্ত ক্রিমের বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করেন একঝাঁক ত্বকরোগ বিশেষজ্ঞ। চিকিৎসকদের এই টিমে রয়েছেন দুই বাঙালি, ডা. কৌশিক লাহিড়ী, ডা. অরিজিৎ কুণ্ডু। অন্যান্যদের মধ্যে রয়েছেন ডা. আবির সারস্বত, ডা. শ্যাম বর্মা, রাজীব শর্মা, রজিথা ডামিসেট্টি। ১০ জুলাই লিভারপুলে ‘দ্য স্পাইন’ এ সম্মান জানানো হবে এদের।
এই পুরস্কারের বাছাই পর্ব সহজ ছিল না। জুরি কমিটির সামনে হাজির হতে হয় ত্বকরোগ বিশেষজ্ঞদের। একাধিক প্রশ্নের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় টাস্ক ফোর্সকে। ডা. কৌশির লাহিড়ীর কথায়, সমস্ত দিক বিচার করে ওঁরা দেখেছেন আমাদের দীর্ঘ লড়াই গণস্বাস্থ্য আন্দোলনে প্রভাব ফেলেছে। এর আগে ২০১৮ সালে ডা. কৌশিক লাহিড়ী অামেরিকান অ্যাকাডেমি অফ ডার্মাটোলজির বিশেষ সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন। এবার ফের লন্ডনের বুকে দুই বাঙালি চিকিৎসকের মাথায় উঠবে মুকুট।
