সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদ গোটা বিশ্বে বন্দিত। কিন্তু উনবিংশ শতাব্দীর সেই তত্ত্বই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে গেল। চ্যালেঞ্জ কার্যতই ছুড়ে দিলেন চিনা বিজ্ঞানীরা। গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, অর্জিত বৈশিষ্ট্যগুলি ডিএনএ-র ক্রম পরিবর্তন না ঘটিয়েই বংশগতিকে প্রভাবিত করতে পারে।
জার্নাল 'সেল'-এ প্রকাশিত হয়েছে একটি গবেষণাপত্র। 'চাইনিজ অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস'-এর গবেষকরা ওই গবেষণাপত্রে জানিয়েছেন, শৈত্যের প্রকোপে ধানগাছের প্রতিক্রিয়া পরীক্ষা করেই তাঁরা এই সিদ্ধান্তে এসেছেন।
বিষয়টা কী? গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, শৈত্যপ্রবাহের শিকার হওয়া ধানগাছগুলি পাঁচ প্রজন্ম ধরে অতি অল্প তাপমাত্রার সঙ্গে অভিযোজিত সহনশীলতা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। আর এই প্রক্রিয়াটি ডারউইনবাদের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা জিনগত পরিবর্তনগুলিকে এড়িয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ পরিবেশগত বাধার ক্ষেত্রে অন্তর্নিহিত ডিএনএ-র ক্রম পরিবর্তন না ঘটিয়েই বংশগত পরিবর্তন আনতে পারে।
প্রসঙ্গত, উনবিংশ শতকে ডারউইন ও ল্যামার্কের বিবর্তনের তত্ত্ব নতুন করে আলোচনায় উঠে আসছে এই সাম্প্রতিক গবেষণায়। দুই বিজ্ঞানী দুই পথের সন্ধান দিয়েছিলেন। ডারউইন তাঁর বিবর্তনবাদের ভিত্তি হিসেবে জিনগত বৈচিত্রের কথা বলেছিলেন। অন্যদিকে ল্যামার্কের দাবি ছিল, জীবেরা বেঁচে থাকার যে বৈশিষ্ট্য অর্জন করে তা অন্য জনুতে স্থানান্তরিত করতে পারে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের গবেষণা ডারউইন নয়, ল্যামার্কের তত্ত্বকেই প্রতিষ্ঠা করছে।
এহেন গবেষণাকে 'যুগান্তকারী' মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। ধারণা করা হচ্ছে বংশগতি সম্পর্কে এতদিনের ধারণায় সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে এই পরীক্ষা। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে কীভাবে জীবদের বৈশিষ্ট্য সঞ্চালিত হয় তা নিয়ে পুরনো ধারণায় নতুন করে আলো ফেলবে এই গবেষণা, এমনই মনে করা হচ্ছে।
