অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: করোনা (Coronavirus) আবহে ট্রেন চলাচল কম হয়েছে। পাশাপাশি যানবাহনের সংখ্যাও কমেছে। করোনা পরিস্থিতির জন্য কিছুদিন আগে কালীপুজো ও ছটপুজোয় বাজি পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা ছিল। যার ফলে পরিবেশ দূষণের মাত্রাও অনেক কমেছে। পরিবেশ এবার অনেক অনুকুল। তাই সাঁতরাগাছি ঝিলে আবার ভিড় করেছে চেনা অতিথিরা।
শীতে অনেক পরিযায়ী পাখির (Migratory Birds) ঠিকানা এই সাঁতরাগাছি (Santragachhi) ঝিল। এবছর শীত জাঁকিয়ে পড়ার আগে থেকেই তাদের আগমন শুরু হয়েছে। সাঁতরাগাছি ঝিলে এ বছর পাখিদের আসার জন্য উপযুক্ত পরিবেশও তৈরি করা হয়েছে। হাওড়া পুরসভার তরফে সাঁতরাগাছি ঝিলের কচুরিপানা পরিষ্কার করে ঝিলকে পাখিদের জন্য উপযুক্ত করে তোলা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: অশনি সংকেত? উটাহ-রোমানিয়ার পর ক্যালিফোর্নিয়ায় দেখা মিলল রহস্যময় মনোলিথের]
সাঁতরাগাছি ঝিলে পরিযায়ী পাখিদের নিয়ে কাজ করা হাওড়ার প্রাণীবিদ্যার এক অধ্যাপক প্রসেনজিৎ দাঁ জানালেন, অন্যান্যবার নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় পরিযায়ী পাখি আসতে শুরু করে। কিন্তু এবার প্রায় মাসখানেক আগে, অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে পরিযায়ী পাখিরা আসতে শুরু করেছে। ভিড় করেছে হাঁস, গাডোয়াল, নর্দার্ন পিনটেলের মতো অতিথি পক্ষীরা। হাওড়ার বাসিন্দা বিশিষ্ট পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের কথায়, ”এই বছরে পাখির সংখ্যা ভাল হবে। কারণ এবার ট্রেন কম চলার কারণে দূষণের মাত্রা আরও কমেছে। অন্যান্যবার দূষণের মাত্রা বেশি থাকায় পরিযায়ী পাখির সংখ্যা কম হয়। এবার সামগ্রিক দূষণের মাত্রা কম হওয়ায় পাখির সংখ্যা বাড়ছে।” হাওড়া জেলার বন আধিকারিক রাজু সরকার জানালেন, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে দিয়ে সাঁতরাগাছি ঝিলে এবার কত পাখি আসছে, তা গণনার কাজ করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় চার হাজার পাখি এসেছে।
[আরও পড়ুন: বলসোনারোর আমলেই সবচেয়ে বেশি বৃক্ষ নিধন হয়েছে আমাজনে, বলছে পরিসংখ্যান]
প্রসঙ্গত, বিগত কয়েক বছর ধরেই পরিবেশগত কারণে পরিযায়ী পাখিরা বদলে ফেলছিল তাদের শীতকালীন গন্তব্য সাঁতরাগাছি ঝিল। এই ঝিলে প্রায় ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে পরিযায়ী পাখিরা আসে। সাঁতরাগাছি স্টেশনের একদম কাছে হওয়ার ফলে ট্রেনের হর্নের আওয়াজ বিঘ্ন ঘটে পরিযায়ী পাখিদের জীবনযাত্রায়। তাই অনেক পাখি এলেও থাকতে না পেরে চলে যায়। কিন্তু এবার দীর্ঘ লকডাউন মানুষের কাছে অভিশাপ হলেও, বিহঙ্গদের কাছে আশীর্বাদ হয়েই এসেছে।