সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মানব সভ্যতা উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে নানা ধরনের বর্জ্যের পরিমাণ। এমনকী আবর্জনা স্তূপ জমেছে মহাশূন্যেও। সব কিছুর মতো সেসব সাফাই করা তো দরকার। প্রথমদিকে লেজার (Laser) রশ্মি ব্যবহার করে মহাকাশের বর্জ্য সাফাইয়ের কাজ করা হচ্ছিল। কিন্তু প্রযুক্তি তো দৌড়চ্ছে। তাই লেজার রশ্মির প্রয়োগ খানিক পিছিয়ে পড়ছে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার প্রস্তাব, বিশেষ ধরনের মহাকাশযান পাঠানো হোক। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাণিজ্যিকভাবেই তা শুরু করতে চায় নাসা।
লেজার রশ্মি ব্যবহার করে মহাকাশ বর্জ্য সাফাইয়ের নেপথ্যে মূল বিজ্ঞান আসলে সরাসরি কোনও সংস্পর্শ ছাড়া কাজ করা। এবার সেই কাজকেই আরও উন্নত করার লক্ষ্য নাসার। এই যে সাফাই মহাকাশযান বা Sweeper Spacecraft পাঠানোর কথা হচ্ছে, তার প্রযুক্তিও অনেকটাই লেজার নির্ভর হবে। মার্কিন মহাকাশ সংস্থার প্রস্তাব, দু ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে – ডিসট্যান্স ফোটন অর্থাৎ কোয়ান্টাম কণা দিয়ে তা সাফ করা এবং অ্যাবলেশন (Ablation) অর্থাৎ কোনও কিছু সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেওয়া। সাফাইয়ের পরও যেগুলি মহাকাশে রয়ে যায়, তাও তো দূর করা দরকার। সেই লক্ষ্যে নাসার নয়া প্রস্তাব।
[আরও পড়ুন: কাটল জটিলতা, উচ্ছেদের নোটিসের মাঝে অমর্ত্যর নামে জমির মিউটেশন করল জেলা প্রশাসন]
‘সায়েন্স’ (Science) পত্রিকায় এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তাতে ফোটন কণার মাধ্যমে সাফাইকাজের উপকারিতার কথা বলা হয়েছে। ভরহীন কোয়ান্টাম (Quantam) কণার সাহায্যে এই কাজ অনেকটা সার্জারির মাধ্যমে শরীরের কোনও বর্ধিত অংশকে বাদ দেওয়ার মতো ব্যাপার। এবং তাতে বর্জ্য দূরীকরণের বিষয়টি নিশ্চিত হয়। আর অ্যাবলেশন পদ্ধতিতে আরও শক্তিশালী লেজার রশ্মি ব্যবহার করা হয়। বর্জ্যের কোনও একটি অংশকে দূর করার পরও যদি কিছু থেকে থাকে, তাহলে তা লেজারের প্রভাবে উৎপন্ন তাপশক্তি থেকে প্লাজমা ও গ্যাসের পিণ্ড তৈরি হবে, ফলে তা আলাদা করে কোনও বর্জ্য তৈরি হবে না। দু’ধরনের সাফাই প্রক্রিয়ার তুলনা করলে অ্যাবলেশন (Ablation) পদ্ধতিকেই এগিয়ে রাখছেন বিজ্ঞানীরা। এতে সাফাইকাজ অনেকটা যথাযথ হয়। বলা হচ্ছে, মহাকাশ বর্জ্যকে সম্পূর্ণরূপে কক্ষচ্যুত করতে এই পদ্ধতিই ভাল। আর ফোটন (Photon) কণার সাহায্যে কাজ করলে বর্জ্য পুরোপুরি মুক্ত নাও হতে পারে।
[আরও পড়ুন: কৌস্তভ বাগচীর বাড়িতে CRPF মোতায়েন সম্ভব নয়, হাই কোর্টকে জানাল কেন্দ্র]
তবে এই পদ্ধতি প্রয়োগের নেপথ্যে নাসার একটাই বক্তব্য। সব দেশের বিজ্ঞান গবেষণা সংস্থা যদি হাতে হাত মিলিয়ে এই পদ্ধতিতে মহাকাশে বর্জ্য সাফাইয়ের কাজ করে, তাহলেই একমাত্র ভালভাবে কাজ হওয়া সম্ভব।