সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সে জীবন ছিল অন্য। মহাকাশ স্টেশনের মধ্যে ভেসে ভেসে বেড়ানো, কৃত্রিমভাবে অক্সিজেন গ্রহণ, তরল কিংবা অর্ধতরল খাবার খাওয়া। অনেকরকম প্রতিকূলতার মধ্যে ৯ মাস ধরে মহাকাশে কার্যত আটকে ছিলেন নাসার দুই নভোচর সুনীতা উইলিয়ামস, বুচ উইলমোর। মার্চ মাসে তাঁরা ফিরেছেন পৃথিবীতে। তারপরই রিহ্যাবে নিয়ে যাওয়া হয় দু'জনকে। সেখানে মাস দুয়েক থাকার পর এবার পুরোপুরি সুস্থ সুনীতা, বুচ। নিজেরাই সেই খবর জানালেন। সুনীতার মন্তব্য, ''এখন আমি ভোর চারটেয় উঠছি। আহা! নিজের মধ্যে আমি ফিরেছি।''
মহাকাশ অভিযানের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়টা অনেকটাই আলাদা। মহাশূন্যে যাত্রার আগে নভোচরদের একাধিক প্রশিক্ষণ, অভ্যাস তৈরি করতে হয়। সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশে নিজেদের শরীরকে মানিয়ে নিতে দীর্ঘদিন ধরে সেসব করা হয়। আর মহাকাশ থেকে ফেরার পরও শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় নভোচরদের। তাই কিছুদিন বিশ্রাম বা রিহ্যাবে পাঠানো হয়। সুনীতা, বুচকেও সেই পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। মহাকাশ থেকে ফেরার পর চেহারা একেবারে ভেঙে পড়া ৫৯ বছরের ভারতীয় বংশোদ্ভুত নভোচরকে সোজা নিয়ে যাওয়া হয় রিহ্যাব সেন্টারে। সেখানে বহু চিকিৎসা হয় তাঁর।
মার্চে পৃথিবীতে ফিরেই রিহ্যাব সেন্টারে যান সুনীতা। ফাইল ছবি।
৯ মাসের স্পেস স্টেশনের জীবনে ব্যাপক হাড়ের ক্ষয় হয়েছিল সুনীতার। ওজন কমে গিয়েছিল। শরীরে মাংসপেশির জোর কমে কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। ফলে পৃথিবীর জীবনযাপনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে বাধা তৈরি হচ্ছিল বিপত্তি। তাই টানা রিহ্যাবে থাকতে হয়েছিল সুনীতা ও বুচকে। বিশেষত সুনীতার স্নায়ু ব্যাপকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে, ঝিমুনি ভাব কাটতে চাইছিল না। তবে এখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ।
সুনীতা নিজেই জানালেন, ''আমি আজকাল ভোর ৪টেয় উঠতে পারছি। আহ! এটাই তো আমার রুটিন, আমি নিজের জীবনে ফিরেছি।'' বুচ উইলমোরের বক্তব্য, ''এখন আমরা রিহ্যাব থেকে বেরিয়ে এসেছি। আসলে মাধ্যাকর্ষণের সঙ্গে নিজেদের শরীরকে মানিয়ে নিতে সময় লাগে। এই সময়টা একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম। এক্ষেত্রে স্নায়ুতন্ত্র স্বাভাবিক অবস্থায় আসতে হয়, তারপর স্বাভাবিক জীবনে ফেরা যায়।'' ফের হয়ত নাসার গুরুত্বপূর্ণ কাজে দেখা যাবে সুনীতা উইলিয়মস, বুচ উইলমোরকে।
