সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মঙ্গলবার সাতসকালে প্রবল ভূমিকম্প নেপালে। মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভের হিসেবে রিখটার স্কেলে ৭.১ মাত্রায় কেঁপে উঠেছে নেপাল-তিব্বত সীমান্ত। যদিও চিনের তরফে দাবি ভূমিকম্পের মাত্রা ৬.৮। ইতিমধ্যেই ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেলেও হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা। কিন্তু ঠিক কেন এদিন ওই অঞ্চলে হল এমন ভয়াল ভূমিকম্প?
ন্যাশনাল সেন্টার ফর সেসমিলজি সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে প্রথম ভূমিকম্পটি অনূভূত হয়। মাটি থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে কম্পন হয়। এই কম্পনের প্রভাব পড়ে দিল্লি, বিহার-সহ উত্তর ভারতের বিরাট অংশে। আতঙ্কিত হয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন বহু মানুষ। সবমিলিয়ে মঙ্গলবার সকালে মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে ৬ বার কম্পন অনূভূত হয় নেপাল-তিব্বত সীমান্তে। আর তাতেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দুই দেশের বিশাল এলাকা। ভেঙে গুঁড়িয়ে গিয়েছে বাড়ি। ভাইরাল হয়েছে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া শিগতাসে শহরের ভিডিও।
এই ভূমিকম্পের উৎসস্থল তিব্বতের টিংরি কাউন্টি। এখান থেকে মোটামুটি ৮০ কিমি দূরেই বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট। এই গোটা অঞ্চলটাই ভূমিকম্পপ্রবণ। তাই এখানে ভূমিকম্পের আশঙ্কা বেশি থাকে সব সময়ই। গত শতাব্দী থেকে ধরলে বহু ভয়াবহ ভূমিকম্পের সাক্ষী এই অঞ্চল। আসলে ভারতীয় ও ইউরেশিয়ান টেকটনিক প্লেটের মধ্যে চলতে থাকা সংঘর্ষের জন্যই এমন পরিস্থিতি। এপ্রসঙ্গে বলা যায়, টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষের ফলেই হিমালয় পর্বতমালা গঠিত হয়েছে। কী এই টেকটনিক প্লেট? পৃথিবীর উপরিতলের ভূত্বক বা পাত তথা প্লেটকে টেকটনিক প্লেট বলা হয়। আর এক্ষেত্রে সেই প্লেটের মধ্যে হওয়া সংঘর্ষই ঘটায় ভূকম্পন।
টিংরিতে এদিন যে কম্পন অনুভূত হল তার পিছনে রয়েছে উত্তর-দক্ষিণ সঙ্কোচন এবং পশ্চিম-পূর্ব চাপের ফলে লাসা ব্লকের তৈরি হওয়া একটি ফাটল। প্রসঙ্গত, লাসা ব্লক দক্ষিণ তিব্বতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক ভৌগলিক অঞ্চল। ক্রিটেসিয়াস যুগে অস্ট্রেলিয়া ও পূর্ব আফ্রিকা থেকে উদ্ভূত হয়ে এটি জুড়ে দেয় ইউরেশিয়ান প্লেটকে। আর এই অস্থিরতার কারণেই এখানে বারবার ঘটে চলে ভূমিকম্প।